মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা থেকে দুই গ্রামের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত ১০ জন, আহত হয়েছেন ২৩ জনের বেশি।
ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার দুপুরে, উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের বালুচর বাজার এলাকায়। সংঘর্ষে জড়ায় মোল্লাকান্দি ও খাসমহল গ্রামের মানুষ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বালুচর বাজারে মোল্লাকান্দি গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে শাহীন ব্যাপারীর একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার গ্যারেজ রয়েছে। গ্যারেজটির ছয় মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে আছে। আজ দুপুর ১টার দিকে সিরাজদিখান পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এক কর্মকর্তা বিল আদায়ের জন্য গ্যারেজে যান। ওই কর্মকর্তার সঙ্গে খাসমহল গ্রামের সুলতান সরদারও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে শাহীন ও বিদ্যুৎ কর্মকর্তার মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হলে সুলতান বিষয়টিতে জড়িয়ে পড়েন এবং শাহীনের হাতে মারধরের শিকার হন বলে অভিযোগ।
সুলতান সরদার নিজের গ্রামে ফিরে গিয়ে ঘটনাটি জানান। এরপর খাসমহল গ্রামের লোকজন টেঁটা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মোল্লাকান্দি গ্রামে এসে হাজির হন। মোল্লাকান্দির মানুষও ইটপাটকেল, লাঠি ও টেঁটা নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে।
দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ। দুই গ্রাম থেকেই অন্তত ৮ থেকে ১০ জন টেঁটাবিদ্ধ হন। ইট ও লাঠির আঘাতে আহত হন আরও অনেকেই। সংঘর্ষে বালুচর বাজারের অন্তত সাত-আটটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুই পক্ষই এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহতদের গোপনে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, আর বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
খাসমহল এলাকার বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন বলেন, “আমাদের গ্রামের একজনকে মারধর করায় আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে মোল্লাকান্দির লোকজন হামলা চালায়। আমাদের সাত-আটজন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন, দুজন গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন।”
অন্যদিকে, মোল্লাকান্দি গ্রামের আমির হোসেন বলেন, “আমরা শুনে গিয়েছিলাম মীমাংসা করতে। কিন্তু খাসমহল গ্রামের লোকজন হঠাৎ টেঁটা, লাঠি নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমিসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছি।”
সিরাজদিখান থানার ওসি শাহেদ আল মামুন বলেন, “সংঘর্ষে অনেকে আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কারও নাম বা পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”