নিজস্ব প্রতিবেদক
গতকাল মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ হয়, যখন ইরান কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই কাতারের নাগরিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দেয়। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে তারা ছোটাছুটি শুরু করে।
তবে বিপরীত এক চিত্র দেখা গেছে বাংলাদেশি প্রবাসিদের মাঝে। আতঙ্কিত হওয়ার বদলে তারা রাস্তায় নেমে হামলার দৃশ্য উপভোগ করতে শুরু করেন। অনেকেই মিসাইলের আলোর রেখা বা বিস্ফোরণের শব্দ ভিডিও করে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ) করেন। কাতারের নাগরিকরা যেখানে জীবন রক্ষায় দিশেহারা, সেখানে কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দ ও আলোকে ‘উৎসবমুখর পরিবেশ’ হিসেবে গ্রহণ করেন বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও পেজে বাংলাদেশি প্রবাসিদের পোস্ট করা ভিডিও ও লাইভ ফুটেজ ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকে ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, “দেখেন ভাই, আসলেই যুদ্ধ শুরু হইছে কিনা, মিসাইল দেখতে আইলাম!”
এই আচরণকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বিষয়টিকে ‘উদাসীনতা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি’ হিসেবে দেখলেও, অনেকে এটিকে ‘সাহস’ বা ‘দূরদেশে উত্তেজনা ভিন্নভাবে দেখার প্রবণতা’ বলেও মন্তব্য করছেন।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, আমেরিকা সম্প্রতি ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানে বলে অভিযোগ ওঠে। তার প্রতিশোধ হিসেবে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলোর একটি, কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটির দিকে মিসাইল হামলা চালায়। এতে ঘাঁটির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কাতারে অবস্থানরত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এবং কাতার সরকার স্থানীয় ও প্রবাসিদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে। এ ধরনের ঘটনায় যুদ্ধ পরিস্থিতিতে উন্মুক্ত স্থানে যাওয়া এবং ভিডিও ধারণ করাকে বিপজ্জনক বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকেও সতর্কতা মেনে চলার আহ্বান জানানো হতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
📌 মন্তব্য
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুদ্ধ কিংবা হামলার পরিস্থিতিকে বিনোদনের চোখে দেখা ঝুঁকিপূর্ণ ও দায়িত্বহীন আচরণ। এ বিষয়ে প্রবাসিদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি।