Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ২৫ জুন ২০২৫, ০৩:৫৩ অপরাহ্ণ

ISS–এ শুভাংশু শুক্লা: বিশ্ব মহাকাশে ভারতের নতুন অধ্যায়

News Image

ডেস্ক রিপোর্ট
২৫ জুন ২০২৫, নয়াদিল্লি

এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে, অ্যাক্সিয়ম মিশন-৪ (Ax-4)–এর অংশ হিসেবে ভারতের গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) বসবাস ও কাজ করতে যাচ্ছেন, যা ভারতের মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করছে।

অ্যাক্সিয়ম স্পেস, নাসা ও স্পেসএক্স-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত চতুর্থ বেসরকারি মহাকাশ মিশন হিসেবে Ax-4 ভারতের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা। ২৫ জুন এই মিশন সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে ক্যানাভেরালের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে SpaceX এর Crew Dragon C213 মহাকাশযান এবং Falcon 9 Block 5 রকেট।

ভারতের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় মহাকাশচারী

শুভাংশু শুক্লা হচ্ছেন দ্বিতীয় ভারতীয় যিনি মহাকাশে যাচ্ছেন। তবে তিনি হচ্ছেন প্রথম ভারতীয়, যিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থেকে কাজ করবেন। মিশনে তিনি পাইলট হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে মনোনীত হয়েছেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন প্রশান্ত বালাকৃষ্ণন নায়ার।

গগনযান থেকে আইএসএস পর্যন্ত

২০১৯ সালে ভারত সরকার গগনযান কর্মসূচি অনুমোদন করে, যার লক্ষ্য ছিল স্বদেশীয় রকেট ও ক্যাপসুলে একজন ভারতীয় মহাকাশচারী পাঠানো। যদিও প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ ও অভিজ্ঞতার সীমাবদ্ধতার কারণে এ কর্মসূচি বিলম্বিত হয়। এরপর ২০২৩ সালে একটি সাহসী উদ্যোগ নেয় ভারতের মহাকাশ গবেষণা বিভাগ (ISRO)—আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় আইএসএস-এ ভারতীয় মহাকাশচারী পাঠানো।

এই উদ্যোগ তখনই ত্বরান্বিত হয় যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর উপলক্ষে আলোচনার সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে ভারতের প্রশিক্ষিত চার মহাকাশচারীর মধ্যে একজনকে নির্বাচিত করে অ্যাক্সিয়ম স্পেসের মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। কারণ, NASA সরাসরি বিদেশি সরকারি মহাকাশচারীদের আর মহাকাশে পাঠায় না।

২০২৪ সালে এই নিয়ে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর হয় যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে। এরপর Axiom Space-এর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, তাদের মিশনে সংরক্ষিত একটি আসন ভারতের জন্য বরাদ্দ করা হয়।

বিজ্ঞান, ব্যবসা ও বৈশ্বিক সহযোগিতার মিশ্রণ

Ax-4 মিশনের মাধ্যমে মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। মিশনের চারজন মহাকাশচারী প্রায় ১৪ দিন ISS-এ কাটাবেন এবং ৬০টির বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবেন। বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে: মাইক্রোগ্রাভিটি জীববিজ্ঞান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, টেকসই কৃষি ও উপকরণ বিজ্ঞান।

এই মিশনের মাধ্যমে মহাকাশ গবেষণা কেবল রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নয়, বরং একটি বাণিজ্যিক ও বৈশ্বিক প্রয়াসে রূপ নিচ্ছে। Axiom Space ভবিষ্যতে একটি স্থায়ী বাণিজ্যিক মহাকাশ স্টেশন নির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা অংশগ্রহণ করতে পারবে।

বৈচিত্র্যপূর্ণ দল, যুগান্তকারী পদক্ষেপ

Ax-4 মিশনের চার সদস্যের মধ্যে রয়েছেন:

এই বৈচিত্র্যপূর্ণ দল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং মহাকাশ গবেষণায় গ্লোবাল পার্টনারশিপ ও অন্তর্ভুক্তির একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে।


ড. এস সোমনাথ (২০২২-২০২৫) পর্যন্ত ISRO-এর চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ভারতের মহাকাশযানের নকশা ও উৎক্ষেপণ কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর মতে, Ax-4 ভারতের জন্য শুধু একটি মিশন নয়, বরং এক নতুন মহাকাশ যুগের সূচনা।

Watermark