Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ২৫ জুন ২০২৫, ০৮:০৮ অপরাহ্ণ

আসামে মুসলিমদের ‘পুশব্যাক’, ভারত থেকে বন্দুকের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে

News Image

কলকাতা ও আসাম:
ভারতের আসাম রাজ্যে মুসলিমদের “বিদেশি” ঘোষণা করে সীমান্তে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। গত মে মাসে রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে কমপক্ষে ৩০০ জন মুসলিমকে বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, দাবি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।

এসব মানুষদের অধিকাংশই ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বিদেশি ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ‘বিদেশি’ ঘোষিত হয়েছেন। কারও কারও নাম রয়েছে ২০১৯ সালের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (NRC)-তে, তবুও তারা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।

বিশেষ করে বাঙালি মুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধী দল ও মানবাধিকার কর্মীদের।

জোর করে সীমান্তে পাঠানো, বন্দুকের হুমকি ও রাবার বুলেট

আসামের মোরিগাঁও জেলার সাইকেল মেকানিক উফা আলী ২৩ মে গ্রেপ্তার হন এবং ২৭ মে তাঁকে ও আরও ১৩ জনকে বিএসএফ (ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী) বন্দুকের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যায়।

বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী (বিজিবি) এবং স্থানীয়রা ভারতীয় নাগরিকদের গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে এই মানুষগুলো ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ ১২ ঘণ্টা পানিতে বসে কাটাতে বাধ্য হন। তাঁদের উপর রাবার বুলেট নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছে।

‘আমার দেশ আমাকে বাংলাদেশি বানালো’

সীমান্তে ঠেলে দেওয়া অনেকের অভিমত—“এই দেশেই আমি জন্মেছি, বাবা-দাদার জন্ম এখানে। তবু আমাকে বাংলাদেশি বানানো হলো।”

বিভিন্ন রাজ্যে একই ধরনের অভিযান চালানো হচ্ছে। গুজরাট ও মহারাষ্ট্র থেকেও বাঙালি মুসলিমদের ধরে সীমান্তে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে। যদিও অনেককে পরে ফিরিয়ে আনা হয়, যখন তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণিত হয়।

বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ সরকার ভারতের এমন পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে এবং কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আপত্তি জানিয়েছে যে, “যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই বাংলাদেশে মানুষ ঠেলে দেওয়া হচ্ছে”।

কেন এই ‘পুশব্যাক’ এখন?

এপ্রিল মাসে জম্মু-কাশ্মীরে হামলার পর দেশজুড়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ায়, যা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের মত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “এই ধরনের পুশব্যাক আসলে জোরপূর্বক বহিষ্কার”, যা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের পরিপন্থী। ভারতের ১৯৫০ সালের একটি আইন দেখিয়ে সরকার এই পদক্ষেপকে বৈধ বলে দাবি করলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে সেটি অবৈধ অভিবাসীদের জন্য, নয় শতাব্দী ধরে বসবাসরত নাগরিকদের জন্য নয়।


প্রতিবেদনটি আল জাজিরার ইংরেজি মূল প্রতিবেদন (24 June 2025) অবলম্বনে সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হয়েছে।

Watermark