বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ূবপুর ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামে ২ সন্তানের জননী রাশিদা আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
নিহতের পরিবার জানায়, আজ দুপুরে রাশিদার স্বামী রিপন মিয়ার পরিবারের সদস্যরা তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরবর্তীতে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। তবে ঢাকায় নেওয়ার পথে রাশিদা মারা যান।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. পান্না বনিক বলেন,
“রাশিদাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। আমি তাকে ওয়াশ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করি। পরে শুনেছি, পথিমধ্যে তিনি মারা গেছেন।”
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি হাসান জামিল খান বলেন,
“বিষয়টি শুনেছি। এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা, ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
নিহত রাশিদার পিতা পৌরসভার দশদোনা গ্রামের গিয়াসউদ্দিন ও রাশিদার ফুফু আছমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন,
“আমাদের মেয়ে রাশিদাকে পিটিয়ে হত্যা করে মুখে কেরির ঔষধ দিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে এলাকায় প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু সে আত্মহত্যা করবে কেন? তার ৮ ও ৪ বছর বয়সী দুটি ছেলে রয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন পারিবারিক অশান্তির জেরে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই এবং মামলা করবো।”
এদিকে নিহতের বড় ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (৮) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানায়,
“আমার আম্মুকে ফুফু জুলেখা গাছের ডাল (লাকড়ি) দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত জুলেখা, যিনি বর্তমানে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি, তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“তাদের অভিযোগ পুরোটাই মিথ্যা। আমার ভাইয়ের স্ত্রী রাশিদা পরকীয়ায় জড়িত ছিল। আজ সকালে এই নিয়ে আমার প্রবাসী ভাই রিপনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রাশিদা কেরির ঔষধ খেয়ে আত্মহত্যা করে। পরকীয়ার বিষয়টি আমরা আগেই তার বাবা-মাকে জানিয়েছিলাম। আমরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু উল্টো তার পরিবার আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে আমাকে ও আমার বোনকে বেদম মারধর করে এবং আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে।”
এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।