Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ৩০ জুন ২০২৫, ০৬:৫৬ অপরাহ্ণ

চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের বৈঠক ঘিরে ভারতের অস্বস্তি, ঢাকা জানালো ‘রাজনৈতিক নয়’

News Image

বার্তালাইভ.কম । আন্তর্জাতিক
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে– চীন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ এর মধ্যে জোট গঠন নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ মিলে ভারতের প্রভাব খর্ব করতে একটি নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের চেষ্টা করছে, যা সার্কের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে এবং ১৯ জুন চীনের কুনমিংয়ে যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশও অংশ নিয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল, সাবেক সার্ক সদস্যদের যুক্ত করে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠন করা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে নির্ধারিত সার্ক সম্মেলন ভারতে ঘটে যাওয়া উরি হামলার প্রতিবাদে ভারত বর্জন করলে, সার্ক কার্যত অচল হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও ভুটানও সেবার ভারতকে সমর্থন করে সম্মেলন বর্জন করে।

এমন প্রেক্ষাপটে চীন ও পাকিস্তান মনে করছে, একটি নতুন আঞ্চলিক সংস্থা গঠনের সময় এসেছে, যা সংযোগ, বাণিজ্য নিরাপত্তা সহযোগিতাকে গুরুত্ব দেবে।

তবে ঢাকার তরফে এই দাবিকে সরাসরি অস্বীকার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেন:

“আমরা কোনো জোট গঠন করছি না। কুনমিংয়ের বৈঠকটি ছিল অফিশিয়াল লেভেলের, রাজনৈতিক নয়। সেখানে নতুন কোনো জোট তৈরির আলোচনা হয়নি।”

এ বক্তব্যে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে এখনো নিরপেক্ষ অবস্থানে আছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ভারসাম্যে অংশ নিচ্ছে না।

প্রতিবেদনে কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, নতুন গঠিত জোটে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে, কিন্তু ভারতের স্বার্থ ও অবস্থান বিবেচনায় ভারতের সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা নিন্ম।

ভারত দীর্ঘদিন ধরেই সার্কের মাধ্যমে আঞ্চলিক একীকরণ ও সহযোগিতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। সার্ক উন্নয়ন তহবিল, দক্ষিণ এশীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও কোভিড জরুরি তহবিলের মাধ্যমে ভারত অনেক অর্থনৈতিক ও শিক্ষা উদ্যোগের নেতৃত্ব দিয়েছে।

কিন্তু পাকিস্তান সার্কে বারবার ভেটো দিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী উদ্যোগ ও আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ চুক্তি আটকে দিয়েছে। ২০১৪ সালের কাঠমান্ডু সম্মেলনে সার্ক মোটর যান চুক্তি পাকিস্তানের আপত্তির কারণে ভেস্তে যায়। এর ফলে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপাল মিলে বিবিআইএন মোটর যান চুক্তি করে নেয়।

মোটা দাগে ভারতের উদ্বেগের ৫টি প্রধান কারণ:

১. সার্কের নিয়ন্ত্রণ হারানোর শঙ্কা

২. চীনের দখলদার কৌশল (Strategic Encirclement)

৩. বাংলাদেশের যুক্ত হওয়া: ভারতের জন্য মনস্তাত্ত্বিক ধাক্কা

৪. চীন-পাকিস্তানের যৌথ উদ্যোগ: নিরাপত্তা হুমকি

৫. বিকল্প জোট গঠনের মাধ্যমে সার্ককে ‘পুনরায় কবর’ দেওয়া

ভারত যা ভাবছে:

 

চীন-পাকিস্তান কেন্দ্রিক একটি নতুন জোট গঠনের সম্ভাবনা থাকলেও, বাংলাদেশ সরকার এই উদ্যোগকে রাজনৈতিক জোট হিসেবে অস্বীকার করেছে। তবুও ভারতের দৃষ্টিকোণে এ ধরনের বৈঠক সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে, যা ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ভারসাম্য ও কূটনীতি পুনঃনির্ধারণ করতে পারে।

Watermark