Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ১ জুলাই ২০২৫, ১২:১৯ অপরাহ্ণ

সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ: পুনর্গঠনের পথ খুলছে

News Image

বার্তালাইভ.কম | আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সিরিয়ার ওপর দীর্ঘদিন ধরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস থেকে জারি করা এক নির্বাহী আদেশে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান, যা আল-আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার পুনর্গঠনের পথ উন্মুক্ত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ট্রাম্পের ডিক্রির পরপরই ৫১৮টি সিরিয়ান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এ পদক্ষেপকে ‘ব্যাপক ও সিদ্ধান্তমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছে ওয়াশিংটনের পর্যবেক্ষক মহল।

২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সিরিয়ার ওপর ব্যাপক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলোর কারণে দেশটির অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

সোমবার এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন,

“যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি সিরিয়াকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা স্থিতিশীল, ঐক্যবদ্ধ এবং শান্তিপূর্ণ থাকবে – নিজের ভেতরে এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে।”

তিনি আরও বলেন,

“একটি ঐক্যবদ্ধ সিরিয়া যা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলিকে আশ্রয় দেবে না এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেবে – সেটিই হবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির মূল ভিত্তি।”

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল শাইবানি বলেন,

“এটি বহু প্রতীক্ষিত একটি সিদ্ধান্ত। এখন আমাদের পুনর্গঠন ও উন্নয়নের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে।”

তিনি আরও যোগ করেন,

“নিষেধাজ্ঞাগুলো দীর্ঘদিন ধরে আমাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে বাধাগ্রস্ত করছিল এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা থেকেও আমাদের বঞ্চিত করেছে।”

যদিও ট্রাম্পের নির্দেশে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে, তবে সব নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার হচ্ছে না। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, সিজার আইন (Caesar Act)–এর অধীনে কিছু নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে কিনা, তা নির্ধারণে তদন্ত চলছে।

নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সিরীয় রাষ্ট্রপতি আহমেদ আল-শারার (পূর্বনাম: আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি) নেতৃত্বাধীন সরকারকে ঘিরে কিছু জটিলতা এখনো রয়ে গেছে। আল-শারা, যিনি একসময় আল-কায়েদার শাখা আল-নুসরা ফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, পরে হায়াত তাহরির আল-শাম (HTS) নামে বিদ্রোহী জোট গঠন করেন। বর্তমানে তিনি সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ধর্মনিরপেক্ষ শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ট্রাম্প এরই মধ্যে মার্কো রুবিওকে নির্দেশ দিয়েছেন আল-শারাকে “বিশেষভাবে মনোনীত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী” তালিকাভুক্তির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে।

ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান ইলহান ওমর এবং রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা আনা পলিনা লুনার একসঙ্গে একটি বিল উত্থাপন করেছেন, যাতে সিরিয়ার ওপর থেকে স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা যায়।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ শুধু সিরিয়ার জন্য নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আনবে।

 

Watermark