Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ২ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৫ অপরাহ্ণ

কেরানী বাজারে স্থবির সেতু নির্মাণ, চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী

News Image

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের কেরানী বাজারে সেতু নির্মাণকাজ শুরু হয় চার বছর আগে, তবে এখনো তা শেষ হয়নি। দীর্ঘ গাফিলতি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা এবং নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির কারণে একাধিকবার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এলাকাবাসী এখনো ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাঠের সাঁকোর ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে।

২০২১ সালের শুরুতে প্রায় ৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ACNT-JV’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণের দায়িত্ব নেয়। প্রকল্পটি ২০২২ সালের অক্টোবরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতায় কাজ মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় এবং তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়।

পরবর্তীতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় ‘মেসার্স নুর সিন্ডিকেট’ নামে নতুন একটি প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণকাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার শর্ত থাকলেও এখনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

স্থানীয়রা জানান, পুরোনো কাঠের সাঁকো এখন একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। এটি ভাঙাচোরা ও ঝুঁকিপূর্ণ হলেও বিকল্প না থাকায় ব্যাটারি চালিত রিকশা, মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিকশাও চলাচল করছে, ফলে দুর্ঘটনার শঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জাবেদ হোসেন বলেন, “বছরের পর বছর ধরে শুধু কাজের নাটক চলতেছে। কিছুদিন কাজ হয়, আবার বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেই পুরোনো সাঁকোই ভরসা।”

চিকিৎসাকর্মী সবিধা দে জানান, “ভাঙা সাঁকো দিয়ে রোগী পার করা খুবই কষ্টকর। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের নিয়ে পার হতে গিয়ে আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়।”

রিকশাচালক মো. জাকির বলেন, “সরকারের অপেক্ষা করতে করতে এখন নিজের ঘরের কাঠ এনে সাঁকো মেরামত করি।”

চরণদ্বীপের বাসিন্দা মো. রাশেদ বলেন, “প্রতিবার ঈদের সময় আতঙ্কে থাকি—সাঁকো ভেঙে গেলে পুরো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।”

বোয়ালখালী উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, “প্রথম ঠিকাদার কাজ ফেলে যাওয়ায় নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুই ঈদের কারণে কিছুটা ধীরগতি ছিল, তবে এখন আবার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে।”

স্থানীয়রা দ্রুত কাজ শেষ করে নিরাপদ ও টেকসই সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

Watermark