নয়াদিল্লি, ৮ জুলাই ২০২৫:
অহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে গঠিত বিশেষ দল তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা ANI। যদিও এখনো তদন্তকারীরা দুর্ঘটনার নির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু জানাননি।
ঘটনাটি ঘটে ১২ জুন, যখন লন্ডনগামী একটি এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই মেগানিনগর এলাকার একটি ছাত্রাবাস কমপ্লেক্সে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪১ জনসহ মোট ২৬০ জন প্রাণ হারান। আশ্চর্যজনকভাবে একজন যাত্রী বেঁচে যান।
বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিমানের সামনের ব্ল্যাক বক্সের ‘ক্র্যাশ প্রোটেকশন মডিউল’ (CPM) নিরাপদে উদ্ধার করা হয় এবং ২৫ জুন দিল্লির এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)-এর ল্যাবে সফলভাবে তার মেমোরি মডিউলের ডেটা ডাউনলোড করা হয়।
ANI সূত্রে জানা গেছে, “গোল্ডেন চ্যাসিস” নামে পরিচিত একটি বিকল্প ব্ল্যাক বক্সের মাধ্যমে ডেটা রিকভারি সঠিকভাবে হয়েছে কি না তা যাচাই করা হয়। প্রথম ব্ল্যাক বক্সটি ১৩ জুন দুর্ঘটনাস্থলের একটি ভবনের ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয় এবং দ্বিতীয়টি ১৬ জুন ধ্বংসাবশেষের ভেতর থেকে পাওয়া যায়।
AAIB-এর নেতৃত্বাধীন তদন্তদলে রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা, হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (HAL), এবং যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (NTSB)-এর বিশেষজ্ঞরা, কারণ বিমানটি যে দেশে নির্মিত, সেই দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করছে তারা।
তদন্তে একজন এভিয়েশন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও একজন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল অফিসারও রয়েছেন। জানা গেছে, দিল্লিতে অবস্থিত AAIB ল্যাবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন NTSB-এর সদস্যরা। বোয়িং ও জিই-এর প্রতিনিধিরাও এই টেকনিক্যাল বিশ্লেষণে অংশ নিয়েছেন।
এক সময় ভারতের নিজস্ব পরিকাঠামো না থাকায় ব্ল্যাক বক্স বিশ্লেষণের জন্য যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, কানাডা, রাশিয়া প্রভৃতি দেশে পাঠানো হতো। তবে দিল্লিতে সম্পূর্ণ সজ্জিত AAIB ল্যাব গড়ে ওঠার পর এখন দেশেই ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR) ও ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (FDR) বিশ্লেষণ করা সম্ভব হচ্ছে।
১৯৯৬ সালের চারখি দাদরি দুর্ঘটনার বিশ্লেষণ হয়েছিল মস্কো ও যুক্তরাজ্যে।
২০১০ সালের ম্যাঙ্গালোর দুর্ঘটনায় রেকর্ডার পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রে (NTSB)।
২০১৫ সালে দিল্লিতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার রেকর্ড বিশ্লেষণ করে কানাডার ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড।
২০২০ সালের কোঝিকোড় দুর্ঘটনায় CVR ও FDR ভারতের DGCA-তে ডাউনলোড করা হলেও বিশ্লেষণে সহায়তা করে NTSB।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস