ওয়াশিংটন, ৯ জুলাই:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে ১০টি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার সাময়িকভাবে স্থগিত হওয়া মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ আবার চালুর ঘোষণা দেওয়ার একদিন পর মঙ্গলবার কেবিনেট বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, “পুতিন সবসময় খুব ভদ্র থাকে, কিন্তু সেটা আদতে কোনো মানে রাখে না। আমাদের দিকে অনেক আজে বাজে কথা ছুড়ে দেয় সে।” এসময় রাশিয়ার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি বিষয়টি বিবেচনা করছি।”
তবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা এই ঘোষণার জন্য কৃতজ্ঞ হলেও ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা “নগণ্য”। ইউক্রেন জানিয়েছে, দেশটির শহরগুলো প্রতিনিয়ত রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হচ্ছে এবং ১০টি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একটি বড় রাতের হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হতে পারে মাত্র।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাশিয়া কিয়েভে ৭ ঘণ্টাব্যাপী ভয়াবহ বিমান হামলা চালায়। হামলায় ৫৫০টির বেশি ড্রোন ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহৃত হয়। অদ্ভুতভাবে হামলার কিছুক্ষণ আগেই ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ফোনালাপ হয় বলে জানা গেছে।
পেন্টাগনের রক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সম্প্রতি ইউক্রেনের জন্য নির্ধারিত ৩০টি প্যাট্রিয়ট মিসাইল ও অন্যান্য অস্ত্র পরিবহন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যার মধ্যে ২০টি মিসাইল ইতিমধ্যে পোল্যান্ড-ইউক্রেন সীমান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর জানায়, ট্রাম্পের নির্দেশেই আবার অস্ত্র সরবরাহ শুরু হচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ট্রাম্পের সাথে শুক্রবারের ফোনালাপ ছিল ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো’। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জেলেনস্কিকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে কিছুটা অবনতি হয়েছিল।
তবে জেলেনস্কি এখন ট্রাম্পের প্রশংসা করছেন, একটি ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন এবং আমেরিকান বিনিয়োগকারীদের ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ ইউক্রেনকে সাহায্য করতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্যাট্রিয়ট কিনে পাঠাতে চেয়েছেন। তবে ট্রাম্প জানিয়েছেন, জার্মানি নিজেদের স্টক থেকেই একটি পাঠাক, এবং ইউরোপ-আমেরিকা যৌথভাবে খরচ ভাগ করে নিক।
আজ রোমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্য সম্মেলন। সেখানে উপস্থিত থাকবেন জেলেনস্কি ও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ। মার্কিন প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন ট্রাম্পের ইউক্রেন বিষয়ক দূত জেনারেল কিথ কেলগ।
জেলেনস্কি বলেন, “আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার এখন আকাশ প্রতিরক্ষা। ধাপে ধাপে আমরা ড্রোন ও মিসাইল প্রতিরোধের ব্যবস্থা বাড়াচ্ছি।”