বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতীয় প্রতীক ‘শাপলা’কে আর রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তফসিলভুক্ত না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল এখন থেকে ‘শাপলা’ প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলম। নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন:
“শাপলা জাতীয় প্রতীক নয়, বরং জাতীয় প্রতীকের একটি অংশ। একইভাবে ধানের শীষ, পাট পাতা ও তারকাও জাতীয় প্রতীকের অংশ।
শাপলা যদি রাজনৈতিক প্রতীক হতে না পারে, তাহলে ধানের শীষও হতে পারবে না।
আবার যদি জাতীয় প্রতীকের কোনো একটি অংশ রাজনৈতিক প্রতীক হতে পারে, তাহলে শাপলাও হতে পারবে।
জাতীয় ফুল হিসেবে শাপলার প্রতীক হতে আইনগত কোনো বাধা নেই। কারণ জাতীয় ফল কাঁঠাল অলরেডি প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আর যদি প্রতীক দেখেই ভয় পান, তাহলে সেটা আগে থেকেই বলেন!”
প্রতীক চাওয়ার পেছনের প্রেক্ষাপট
সম্প্রতি এনসিপি নির্বাচন কমিশনের কাছে নিবন্ধনের আবেদন করে এবং দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ দাবি করে। এ ছাড়া তাদের পছন্দের তালিকায় আরও ছিল ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’।
অন্যদিকে নাগরিক ঐক্যও ইতিপূর্বে ‘কেটলি’ প্রতীক পেলেও তারা সেটি পরিবর্তন করে নতুন করে ‘শাপলা’ ও ‘দোয়েল’ প্রতীক চেয়েছে। ২ জুলাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে দেখা করে নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার বলেন:
“আমরা যখন নিবন্ধন পাই, তখন পছন্দমতো প্রতীক পাইনি। তাই ১৭ জুন প্রতীক পরিবর্তনের আবেদন করি।”
ইসির ব্যাখ্যা
এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন:
“জাতীয় প্রতীক ও জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষায় আইন রয়েছে। যদিও জাতীয় ফুল বা ফলের ক্ষেত্রে আলাদা কোনো আইন নেই, তবে প্রতীকের মর্যাদা বিবেচনায় আমরা ‘শাপলা’কে প্রতীক হিসেবে অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
তিনি আরও জানান, অতীতেও বিভিন্ন দল ‘শাপলা’ প্রতীক চাইলেও নির্বাচন কমিশন তা অনুমোদন দেয়নি।
বর্তমানে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিল অনুযায়ী ৬৯টি প্রতীক রয়েছে। তবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন এই সংখ্যা ১০০-এর বেশি করতে চায়। এ লক্ষ্যে প্রতীকের সংশোধিত তালিকা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।