Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১২:২৫ অপরাহ্ণ

অধ্যক্ষকে মসজিদে অবরুদ্ধ করলেন শিক্ষার্থীরা, পাশে শিক্ষকরাও

News Image

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে দীর্ঘ আট ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ। সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেল তিনটা থেকে শুরু করে রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত অধ্যক্ষকে কখনো পরীক্ষা ভবনে, কখনো কলেজের মসজিদের ভেতরে আটকে রাখেন বেশ কয়েকজন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। তাদের একমাত্র দাবি—অধ্যক্ষের পদত্যাগ।

শিক্ষকদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করা হয় এবং কিছুদিন সময় চাওয়া হয় সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য। কিন্তু শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনড় অবস্থান নেয়। রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত অধ্যক্ষ মসজিদেই অবরুদ্ধ ছিলেন, সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন শিক্ষক।

বিক্ষোভের পেছনে রয়েছে শিক্ষার্থীদের পূর্ব ঘোষিত ৯ দফা দাবি, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ছাত্র সংসদ নির্বাচন, ডিগ্রি শাখার জন্য আলাদা আধুনিক ক্যাম্পাস, নিরাপত্তা জোরদারে সিসিটিভি ও পর্যাপ্ত লাইটিং, ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন, শিক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস, আবাসিক হলে জলাবদ্ধতা নিরসন, সুপেয় পানি ও আধুনিক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আলাদা বাজেট এবং কলেজের আয়-ব্যয় প্রকাশে স্বচ্ছতা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মফিদুল হাসান পল্লব বলেন, “প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার আগে কাউকে নিয়ে যেতে হয়, অধ্যক্ষ নিজেই দরজায় তালা দেন। এটা গণতান্ত্রিক আচরণ নয়।” উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের জাহিদুল ইসলাম জানান, “ফয়জুন্নেসা হলে ছাত্রীদের মানসিক চাপ দিয়ে কথা বলায় বাধা দেওয়া হয়, শোকজ ও অভিভাবক ডাকার ভয় দেখানো হয়। নয় দফার একটিও পূরণ হয়নি, বরং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”

নবাব ফয়জুন্নেসা হলের শিক্ষার্থী সাবরিনা সুলতানার অভিযোগ, “হলে পানি নেই, বারবার বলার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তামিম নির্যাতনের ঘটনার এক বছর পার হয়ে গেলেও অধ্যক্ষ বিচার করতে পারেননি, বরং শিক্ষার্থীদের হুমকি দিচ্ছেন বহিষ্কারের।”

শিক্ষার্থীদের দাবির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে শিক্ষক পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক ও বাংলা বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক মো. মুনছুর হেল্লাল দাবি করেন, “প্রশাসনিক ভবনের ডিজিটাল বোর্ডে খাতওয়ারী নোটিশ দেওয়া হয়েছে, ওয়েবসাইটেও তা আপলোড করা হয়েছে।” তবে অধ্যক্ষের পদত্যাগ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

অধ্যক্ষের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। কলেজে চলমান এই অচলাবস্থা কীভাবে কাটবে, তা নির্ভর করছে প্রশাসনের দ্রুত সিদ্ধান্ত ও কার্যকর পদক্ষেপের ওপর।

Watermark