রাজধানীর সরকারি সাত কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হচ্ছে। অন্তর্বর্তী প্রশাসক অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস জানিয়েছেন, আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর চলতি জুলাই মাস থেকেই শুরু হতে পারে অনলাইন আবেদন।
অধ্যাপক ইলিয়াস জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ইতোমধ্যে পাঠদানের অনুমোদন পাওয়া গেছে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের খুঁটিনাটি কাজ চলছে। তার ভাষায়, “চেষ্টা করছি এই সপ্তাহেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে। খুব বেশি দেরি হলেও ২০ জুলাইয়ের আগেই এটি প্রকাশ করা হবে।”
ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগস্টের শেষ সপ্তাহ কিংবা সেপ্টেম্বরের শুরুতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। দ্রুত ফল প্রকাশ করে অক্টোবর মাস থেকে ক্লাস শুরু করার লক্ষ্য রয়েছে আমাদের।”
এ বছর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে সাত কলেজে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হবে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (ডিসিইউ)-এর অধীনে। তবে ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতিতে খুব একটা পরিবর্তন আসছে না। আগের মতোই সনাতন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানান প্রশাসক। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষার প্রযুক্তিগত দিকটি সহায়তা করার জন্য বুয়েটের সঙ্গে আলোচনা চলছে, এবং সব ঠিক থাকলে বুয়েটের টিমই এ বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবে।
আসনসংখ্যা নিয়ে অধ্যাপক ইলিয়াস বলেন, “বিগত বছরগুলোর মতোই বিদ্যমান কাঠামো অনুযায়ী ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। তবে যেসব বিভাগে শিক্ষক একেবারেই নেই, সেখানে ভর্তির জন্য আসন স্থগিত রাখা হতে পারে।” তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী আসন সংখ্যা নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে।
২০২৩ সালে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা (সেকেন্ড টাইম প্রার্থী) আবেদন করতে পারবে কি না, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা সেকেন্ড টাইম প্রার্থীদের সুযোগ দিতে চাইছি। ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে। তবে আগামী বছর থেকে সেকেন্ড টাইমের সুযোগ বাতিল হতে পারে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকার সময়ে সর্বশেষ সাত কলেজে বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান এবং ব্যবসায় শিক্ষা—এই তিন অনুষদ মিলিয়ে মোট ২৩ হাজার ৫২৮টি আসন ছিল। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদে ৮ হাজার ৬২৭টি, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞানে ১০ হাজার ১৯টি এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ৪ হাজার ৮৯২টি আসন ছিল। অধ্যাপক ইলিয়াসের মতে, এ বছর আসন সংখ্যা খুব সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
সাত কলেজের ভর্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে এ সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়েছে। তবে সঠিক সময়মতো ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ ও ক্লাস শুরুর ওপরই নির্ভর করছে শিক্ষাবর্ষের কার্যকর সূচনা।