ময়মনসিংহের ভালুকায় দুই সন্তানসহ এক নারীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় নিহতের দেবর নজরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়েছে। নিহত নারীর বড় ভাই জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সোমবার (১৪ জুলাই) রাতে ভালুকা মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি হুমায়ূন কবির। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও এক-দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত ময়না আক্তার (২৫), তার মেয়ে রাইসা আক্তার (৭) ও ছেলে নীরব হোসেন (২)-এর গলাকাটা লাশ সোমবার দুপুরে ভালুকা পৌর শহরের পনাশাইল এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহত ময়না আক্তার ভালুকা উপজেলার রাজৈ ইউনিয়নের পায়লাবর চৌরাস্তা গ্রামের বাসিন্দা আফতাব উদ্দিনের মেয়ে। তার স্বামী রফিকুল ইসলাম নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার সেনের বাজার গ্রামের বাসিন্দা। রফিকুল ভালুকার রাসেল স্পিনিং মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন এবং তিনি, তার স্ত্রী-সন্তান এবং ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে নিয়ে ঐ ভাড়া বাসায় থাকতেন।
রফিকুল জানান, “রোববার রাত ৮টায় আমি ডিউটিতে চলে যাই। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসায় ফোন দিলে ময়নার নম্বর বন্ধ পাই। এরপর নজরুলের নম্বরে কল দিই, তখন ময়নার সঙ্গে কথা হয়। কিন্তু সোমবার সকালে ফিরে এসে দেখি দরজা বন্ধ, গেট তালাবদ্ধ। পরে বাড়ির মালিককে ডেকে তালা ভেঙে দেখি—তিনজনই রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত। নজরুলও বাসায় নেই, তার ফোনও বন্ধ। আমি নিশ্চিত—আমার ভাই-ই সবাইকে হত্যা করে পালিয়েছে।”
তিনি আরও জানান, নজরুল গাজীপুরের একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন এবং প্রায় দুই বছর কারাগারে ছিলেন। আড়াই মাস আগে রফিকুলই ৪০ হাজার টাকা ধার করে তাকে জামিনে মুক্ত করেন। এরপর থেকে ভাইকে সঙ্গে নিয়ে একই বাসায় বসবাস করছিলেন তারা।
ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির বলেন, “নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তাকে ধরার জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।”
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে চরম আতঙ্ক ও শোক। স্থানীয়রা এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বিস্মিত এবং দ্রুত বিচার দাবি করছেন।