চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার একটি বেসরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিকুননাহার জুমা এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেও ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায়, তার রোল নম্বরে অন্য একজন ছাত্রের ফল এসেছে। ফলে নিজের পরীক্ষার কোনো ফলই পাননি তিনি। এ ঘটনায় চরম হতাশায় ভেঙে পড়েছেন এই শিক্ষার্থী ও তার পরিবার।
ভুক্তভোগী জুমা উপজেলার উত্তর নাগদা গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল খানের মেয়ে। তিনি চলতি বছর আলহাজ তোফাজ্জল হোসেন ঢালী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষার আগে জুমাকে প্রবেশপত্র না দিয়েই প্রথম চারটি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধ্য করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে মৌখিক অনুমতির মাধ্যমে পরীক্ষাগুলো দিতে হয় তাকে, পরে দেওয়া হয় প্রবেশপত্র। প্রতিটি পরীক্ষার উপস্থিতি খাতায় স্বাক্ষরও রয়েছে তার।
জুমার বাবা ইসমাইল খান জানান, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে তার মেয়ে বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে এবং দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। নিয়ম অনুযায়ী ফরম পূরণ করেও প্রবেশপত্র না পাওয়ায় শুরু থেকেই দুশ্চিন্তায় ছিল তারা। পরীক্ষা চলাকালীন মৌখিক অনুমতি নিয়ে পরীক্ষা দিলেও ফল প্রকাশের দিন দেখা যায়, তার রোল নম্বরে ফল এসেছে ‘ফারদীন হোসেন’ নামে অন্য এক শিক্ষার্থীর, যিনি বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এবং আগামী বছর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা।
পরিবারের দাবি, জুমার ফলাফল বাংলা, গণিত ও ব্যবসায় শিক্ষার একটি বিষয়ে ফেল দেখানো হয়েছে। ফলে বোর্ড ও শিক্ষা কার্যালয়ে গিয়ে খোঁজ নিলেও ফল সংশোধনের কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাজহারুল হক অভিযোগ এড়িয়ে যান এবং বিষয়টি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে চাপও দেন বলে অভিযোগ করেন জুমার পরিবার।
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক মাজহারুল হক জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং কুমিল্লা বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। জুমাকে প্রবেশপত্র না দেওয়ার ঘটনায় অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলমের গাফিলতির কথা স্বীকার করে বলেন, তাকে মৌখিকভাবে শাসানো হয়েছে। তবে ভুক্তভোগীর পরিবারের ওপর কোনো চাপ প্রয়োগের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
ঘটনার বিষয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গাউছুল আজম পাটোয়ারী জানান, ঘটনাটি তদন্তাধীন এবং বোর্ড কর্তৃপক্ষ আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় নিয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।