বাংলাদেশের স্কুলগুলোতেও ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে ক্লাসরুমের বসার ধারা। দীর্ঘদিন ধরে ‘ব্যাকবেঞ্চার’ শব্দটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি আলাদা পরিচয় হিসেবে গণ্য ছিল। কেউ এটিকে আরামদায়ক স্থান মনে করলেও, অনেক সময় এটি শিক্ষার্থীদের জন্য এক ধরনের বঞ্চনার জায়গা ছিল। তবে এখন শিক্ষাবিদ ও প্রশাসনের মধ্যেও ক্লাসরুমের বসার নতুন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
কেরল, তামিলনাডু, পশ্চিমবঙ্গ ও পাঞ্জাবের মতো ভারতের কিছু রাজ্যে ‘ব্যাকবেঞ্চ’ সংস্কৃতি বিলুপ্ত করে ইউ-আকৃতির বসার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশেও শিক্ষাবিদরা বলছেন, এমন আধুনিক ব্যবস্থা চালু করলে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ ও পারস্পরিক সংলাপ বৃদ্ধি পাবে।
ঢাকার একটি প্রাইভেট স্কুল ইতোমধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে বসার ব্যবস্থা পরিবর্তন করেছে। তারা ক্লাসরুমে ডেক্সগুলোকে আধা বৃত্তাকারে সাজিয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে শিক্ষক ও বোর্ডের সঠিক দৃশ্যমানতা নিশ্চিত করেছে। শিক্ষকেরা জানান, এতে শিক্ষার্থীদের সক্রিয়তা ও প্রশ্ন করার প্রবণতা বেড়েছে।
জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধুমাত্র বসার স্থান নয়, শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার জন্য মনোভাবের পরিবর্তন জরুরি। শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শ্রেণিকক্ষে নানামুখী আলোচনাও গুরুত্ব পাচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, “বসার নতুন পদ্ধতি শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং শিক্ষার প্রতি আগ্রহ তৈরি করবে। আমরা এই ধরনের উদ্যোগে উৎসাহী।”
তবে শিক্ষাবিদরা মনে করেন, ‘ব্যাকবেঞ্চার’ হওয়া মানসিকতার বিষয়, যা শুধু বসার স্থান বদলালে যাবে না। শিক্ষাব্যবস্থায় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের পরিবর্তনও দরকার।
পরিশেষে, বাংলাদেশেও দ্রুত এমন অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্লাসরুম ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী শিক্ষার আলোয় সমানভাবে আলোকিত হতে পারে।