গোপালগঞ্জ, ১৬ জুলাই:
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রগুলো এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে, যদিও প্রথমিকভাবে তিনজনের নাম জানা গেলেও চতুর্থ নিহতের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন—দীপ্ত সাহা, রমজান কাজী ও ইমন তালুকদার।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, “এখন পর্যন্ত চারজনের মৃতদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। প্রত্যেকের শরীরে স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”
সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরও অনেকে, তবে এখনো সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে আহতদের ভিড় বাড়ছে।
সকাল থেকেই গোপালগঞ্জ ছিল উত্তপ্ত।
এনসিপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার আগে থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র কর্মীরা। সকালে পুলিশ ও প্রশাসনের গাড়ি লক্ষ্য করেও হামলা চালানো হয়। এনসিপির শীর্ষ নেতাদের বহরেও হামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুপুরের দিকে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা এবং সন্ধ্যার পর স্থানীয় প্রশাসন পুরো গোপালগঞ্জ শহরে কারফিউ জারি করে, যা রাত ৮টা থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
বর্তমানে গোটা শহরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। শহরের মোড়ে মোড়ে সেনা ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়, আতঙ্ক এবং ক্ষোভ বিরাজ করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গোপালগঞ্জে এই রক্তক্ষয়ী ঘটনা শুধু স্থানীয় পরিস্থিতিই নয়, জাতীয় রাজনীতির গতিপথেও বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে। দেশব্যাপী বিরোধী দলগুলোর মধ্যে এই হামলার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটি এখন সময়ের অপেক্ষা।