Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:০৭ অপরাহ্ণ

গোপালগঞ্জে গুলিবিদ্ধ তরুণ ঢাকায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি

News Image

গোপালগঞ্জে এনসিপি সমাবেশ ঘিরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে চারজন নিহত, গুলিবিদ্ধ তরুণ ঢাকায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি; কারফিউ জারি

গোপালগঞ্জ, ১৬ জুলাই:
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে রণক্ষেত্রের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত চারজন নিহত এবং বহু আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
তীব্র উত্তেজনার মধ্যে গোপালগঞ্জে বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।

নিহত ও আহতের তালিকা

গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আরএমও নিশ্চিত করেছেন, সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন—

অন্যদিকে, সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন মোহাম্মদপাড়া এলাকার সুমন বিশ্বাস (২০)।
তার পরিবার জানায়, সুমন এনএসআই কোয়ার্টারের পেছনে একটি পানি সরবরাহকারী কোম্পানিতে কাজ করতেন। দুপুরে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন। একটি গুলি তার পেটের ডান পাশ দিয়ে ঢুকে সামনের দিক দিয়ে বেরিয়ে যায় এবং ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।

হামলার বিবরণ

বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলাকালে হঠাৎ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মঞ্চে হামলা চালায়। তারা সাউন্ড সিস্টেম, মাইক, চেয়ার ভাঙচুর করে এবং নেতাকর্মীদের মারধর করে।
কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।
ভয়ে এনসিপি নেতারা আশ্রয় নেন পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে। পাল্টা হামলায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের গাড়ি ও এনসিপি নেতাদের বহরে ইটপাটকেল ছুঁড়ে এবং বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে।

প্রশাসনের পদক্ষেপ

পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হওয়ায় ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।
এরপর সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কারফিউ ঘোষণা করা হয়, যা রাত ৮টা থেকে পরদিন বিকেল ৬টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

আন্দোলনের পটভূমি

রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই গণহত্যার বিচার এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দাবিতে এনসিপি এই পদযাত্রা ও সমাবেশের আয়োজন করেছিল।
তাদের দাবি ছিল, গোপালগঞ্জেই ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক সহিংসতা ও বৈষম্যের মূল কেন্দ্র—তাই সেখানে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে ‘ভয়ের মিথ’ ভাঙাই ছিল আন্দোলনের অন্যতম বার্তা।

সর্বশেষ পরিস্থিতি

শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সেনা, পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন রয়েছে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে।

Watermark