Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৩ অপরাহ্ণ

গোপালগঞ্জ আপডেট: কারফিউ জারি, আটক ১৪

News Image

গোপালগঞ্জ, ১৭ জুলাই:
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর ঘোষিত পদযাত্রা ও জনসভাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা ও সহিংসতার পর পুরো শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সহিংস ঘটনায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরইমধ্যে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান জানান, “বুধবার রাতে আটককৃতদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি।”

কারফিউর প্রভাব ও পরিস্থিতি

বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া কারফিউ বৃহস্পতিবার সকালেও বহাল ছিল। ভোরের আলো ফোটার পরও শহরে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল দেখা যায়নি। মূল সড়কগুলোতে যানবাহন নেই বললেই চলে, দোকানপাট ও বাজার ছিল পুরোপুরি বন্ধ। কিছু অলিগলিতে অবশ্য কিছু মানুষ চলাচল করলেও সংখ্যায় তা ছিল সীমিত।

খাবারের দোকান ও হোটেলের কিছু অংশ খুললেও আতঙ্ক ছিল চোখে-মুখে। জরুরি প্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বের হয়েছেন, তাদের চলাফেরাতেও ছিল সংকোচ। সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোনো উপস্থিতি চোখে পড়েনি।

বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখা যায়, এখনো রাস্তাজুড়ে পড়ে আছে ইটপাটকেল, বাঁশ ও গাছের গুঁড়ি। মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে ভাঙা তোরণ পড়ে থাকায় যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। অনেক স্থানে গাছ কেটে রাস্তার ওপর ফেলে রাখা হয়েছে, যা ইচ্ছাকৃত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ইঙ্গিত দেয়।

ঘটনার সূত্রপাত ও সংঘর্ষের বিবরণ

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তেজনা শুরু হয় মঙ্গলবার থেকেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়।

বুধবার সকালে এনসিপি নেতাদের গাড়িবহর শহরে প্রবেশের আগেই সহিংসতা শুরু হয়। পুলিশের একটি গাড়িতে হামলা ও আগুন দেওয়ার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এরপর ইউএনও’র গাড়িতেও হামলা চালানো হয়।

দুপুর দেড়টার দিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে এসে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপির সমাবেশমঞ্চে হামলা চালায়। পরিস্থিতির চরম অবনতির মুখে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন এবং পরে সেনাবাহিনীর একটি সাঁজোয়া যানে করে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

প্রথমে দুপুরে প্রশাসন জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু তাতেও সহিংসতা না থামায় সন্ধ্যায় পুরো শহরে কারফিউ জারি করা হয়।

 

Watermark