টোকিও, জুলাই ২০২৫:
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে আর্থিক অগ্রগতির কারণে বিদেশে কাজ করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেক কর্মী। ফলে শ্রমিক সংকটে পড়েছে জাপান। এই সংকট মোকাবেলায় দেশটি এখন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দিকে ঝুঁকছে। বিকল্প শ্রমিক সরবরাহকারী দেশ হিসেবে জাপান গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ, উজবেকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোকে।
জাপানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া জানিয়েছে, দেশটির স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় এসব দেশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে সহায়তা করার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থা নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই সংস্থাটি নিয়োগ প্রক্রিয়া, শ্রমবাজারের চাহিদা এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতাগুলো বিশ্লেষণ করবে।
জাপান মূলত নার্সিং, নির্মাণ এবং খাদ্যসেবার মতো খাতে বিদেশি কর্মীর ওপর নির্ভরতা বাড়াতে চায়। এ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জাপানি কোম্পানি ইতিমধ্যে কিছু দেশভিত্তিক উদ্যোগ নিয়েছে:
বর্তমানে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং (TITP) ও নির্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিক (SSW) প্রোগ্রামে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার বিদেশি শ্রমিক কাজ করছেন। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি, অর্থাৎ ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৯ জন, এসেছেন ভিয়েতনাম থেকে।
অন্যদিকে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর অংশগ্রহণ এখনো তুলনামূলকভাবে কম। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব প্রোগ্রামে নিবন্ধিত শ্রমিক সংখ্যা ছিল:
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। জাপান সরকারের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে ভারতের মোট কর্মীসংখ্যা ছিল ৪৯২.৪৩ মিলিয়ন, এবং প্রতি বছর সেখানে নতুন করে ১ কোটির বেশি তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। তবে একই সময়ে ভারতের ১৫–২৪ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ছিল ১৫.৮%, যা জাপানের জন্য একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
জাপানে বিদেশি শ্রমিক পাঠানোয় চীন এক সময় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে চীনের মাথাপিছু জিডিপি ৭ হাজার ডলার ছাড়ানোর পর থেকে দেশটির কর্মীদের আগ্রহ কমতে থাকে। ২০২৪ সালের শেষে জাপানে চীনা টেকনিক্যাল ইন্টার্নের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৫,৯৬০ জন। ফলে, চীন থেকে আসা শ্রমিকের সংখ্যা কমায় তৈরি হওয়া শূন্যতা পূরণে জাপান এখন বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানসহ দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর ওপর বেশি নির্ভর করতে চাইছে।