Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ২১ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৪ অপরাহ্ণ

বিমান বিধ্বস্ত: বড় ছেলেকে খুঁজে পেলেও ছোট সন্তানকে এখনো পাচ্ছি না

News Image

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাঙ্গণে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। আজ সোমবার দুপুরে দুর্ঘটনার পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সামনে ভিড় জমিয়েছেন শত শত বাবা-মা ও স্বজন। অনেকে তাঁদের সন্তানদের খুঁজে পেয়েছেন, কেউ কেউ এখনো নিখোঁজ সন্তানের খোঁজে কাঁদছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর দেড়টার কিছু আগে মাইলস্টোন স্কুলের দোতলা ভবনের প্রবেশমুখে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় এবং ভবনের একটি অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অনেকেই। আগুনে দগ্ধদের একের পর এক পাঠানো হচ্ছে রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেখানে অন্তত ২৮ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকজনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়েছে।

দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতায় কাজ করছে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের।

প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লাকি আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন, তাঁর দুই সন্তানই মাইলস্টোন স্কুলে পড়ে। তিনি জানান, বড় ছেলেকে খুঁজে পেলেও ছোট সন্তানকে এখনো পাচ্ছেন না। চোখেমুখে আতঙ্ক আর উদ্বেগের ছাপ স্পষ্ট ছিল তাঁর।

ফেরদৌসী বেগম নামের আরেক অভিভাবক বলেন, তাঁর মেয়ে স্কুলের ভেতরে আটকা পড়েছে এবং তিনি তার সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে পারছেন না।

মাইলস্টোন কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সবুজ মিয়া জানান, দোতলা ভবনটিতে নিয়মিত পাঠদান চলত। আজ ক্লাস শেষ হয়েছিল বেলা ১টার দিকে। অনেক শিক্ষার্থী তখন বাড়ি ফিরে গিয়েছিল, তবে কিছু শিক্ষার্থী অভিভাবকদের জন্য অপেক্ষা করছিল। ঠিক সেই সময়ই বিমানটি ভবনের সামনে বিধ্বস্ত হয় এবং আগুন ধরে যায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিম হাসান সিয়াম বলেন, বিমানটি প্রথমে কলেজের প্রজেক্ট-৭ ভবনে ধাক্কা লাগে, এরপর জ্বালানির লিকেজ হয় এবং পরে সেটি প্রজেক্ট-২ ভবনের সামনে এসে আছড়ে পড়ে। ওই ভবনের নিচতলায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস চলছিল। মোট ১৬টি শ্রেণিকক্ষ এবং ৪টি শিক্ষকের কক্ষ ছিল ভবনটিতে।

সিয়াম বলেন, “আর কয়েক মিনিটের মধ্যেই ক্লাস শেষ হতো। ঠিক তার আগেই ভয়াবহ এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।”

ঘটনাস্থলে এখনো উদ্ধার তৎপরতা চলছে। কতজন হতাহত হয়েছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরিস্থিতি এখনও থমথমে।

Watermark