‘বয়স কেবল একটি সংখ্যা’— এই বহুলপ্রচলিত কথাটিকে বাস্তবে রূপ দিলেন ভারতের উত্তর প্রদেশের হাপুর জেলার এক বাবা ও তাঁর ছেলে। ৪১ বছর বয়সী যশপাল সিং নাগার ও তাঁর ২১ বছর বয়সী ছেলে শেখর নাগার একসঙ্গে রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে উত্তীর্ণ হয়ে গড়েছেন বিরল এক নজির।
দুজনেই এখন উত্তর প্রদেশের বেরেলি ও শাহজাহানপুরে ১০ মাসের পুলিশ প্রশিক্ষণের অপেক্ষায় আছেন। তাঁদের গ্রামের নাম উদয় রামপুর নগলা, যা ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
গত মাসে লক্ষ্ণৌতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের হাত থেকে কনস্টেবল নিয়োগপত্র গ্রহণ করেন এই বাবা–ছেলে। ওই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৬০ হাজার প্রার্থী।
‘আমার জন্য গর্বের বিষয়, বাবা আমার সঙ্গে একই পরীক্ষায় পাস করেছেন,’ বলেন শেখর। তিনি জানান, তাঁরা দুজন একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এবং একে অন্যকে প্রস্তুত হতে সহযোগিতা করেছেন। শেখর বাবাকে দৌড় ও শারীরিক পরীক্ষায় সহায়তা করেছেন, আর যশপাল ছেলেকে সাধারণ জ্ঞান শিখিয়েছেন।
শেখর একজন স্নাতক, আর যশপাল ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক হাবিলদার। দীর্ঘ ১৫ বছর সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকার পর ২০১৯ সালে অবসর নেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য হওয়ায় কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় বয়সসীমায় ছাড় পান যশপাল।
বিস্ময়কর বিষয় হলো, বাবা-ছেলে কেউই কোনো প্রথাগত কোচিং সেন্টারে যাননি। তাঁরা অনলাইন ভিডিও এবং ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমেই নিজেদের প্রস্তুত করেন। শেখর বলেন, ‘আমরা গ্রন্থাগারে গিয়ে পড়তাম, কিন্তু কেউ জানত না আমরা বাবা–ছেলে।’
তবে এখানেই থেমে থাকতে চান না তাঁরা। ভবিষ্যতে উপপরিদর্শক (এসআই) পদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন দুজনেই। শেখর নিজেকে প্রস্তুত করছেন ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি (এনডিএ) পরীক্ষার জন্যও।
এই ঘটনায় অনুপ্রাণিত হচ্ছেন বহু তরুণ-তরুণী এবং প্রমাণিত হচ্ছে—পরিশ্রম, উৎসাহ এবং পারস্পরিক সহযোগিতায় যেকোনো সীমা জয় করা সম্ভব, এমনকি সেটি যদি বয়সের সীমানাও হয়।