২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি আজ (বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চে এ শুনানি হবে।
এর আগে ১৭ জুলাই আপিল বিভাগের একই বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ-টু-আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। সেদিন আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন ২৪ জুলাই। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
বিএনপির পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মো. মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন এবং অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।
এই মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বাতিল করে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর আসামিদের খালাস দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অন্য আসামিরা মামলায় খালাস পান।
পরে ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে হত্যা ও বিস্ফোরক দুটি মামলার পৃথক ৭৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ওই রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক দুটি লিভ-টু-আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। আবেদন দুটি প্রথমে ২০২৪ সালের ১৩ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। চেম্বার আদালত পরে বিষয়টি নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
পরবর্তী শুনানিতে, ১৫ মে থেকে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে ২৮ মে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের লিভ-টু-আপিল মঞ্জুর করেন এবং পূর্ণাঙ্গ আপিল দায়েরের নির্দেশ দেন। এরপর শুনানির জন্য ধারাবাহিকভাবে দিন ধার্য করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি শেখ হাসিনার এক সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হন এবং শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা (হত্যা ও বিস্ফোরক) হয় এবং বিচারিক আদালতে দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে তারেক রহমান, বাবরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করা হয়। তবে হাইকোর্ট সে রায় বাতিল করে আসামিদের খালাস দেয়, যার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।