গ্রীষ্মকালে শরীর ঠান্ডা রাখতে আর স্বাদে একটু বৈচিত্র্য আনতে আনারসের জুড়ি নেই। এই টক-মিষ্টি ফলটি শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিগুণেও অনন্য। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বি৬, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম এবং আঁশ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজমে সাহায্য করতে এবং ত্বক ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে। এক কাপ আনারসেই দিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর প্রায় পুরোটা পূরণ হয়।
আনারসে থাকা ব্রোমেলিন নামের একটি বিশেষ এনজাইম প্রাকৃতিকভাবে প্রোটিন ভাঙতে সাহায্য করে, ফলে এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে এবং পেটের গ্যাস ও অস্বস্তি কমায়। যাঁরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাঁদের জন্য আনারস একটি আদর্শ ফল—এতে ক্যালোরি কম, ফাইবার বেশি। ফলে পেট দীর্ঘ সময় ভরা থাকে এবং বাড়তি খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
শুধু তাই নয়, আনারস প্রদাহ কমাতেও সহায়তা করে। বিশেষ করে যারা আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্ট ব্যথায় ভোগেন, তাদের জন্য এটি উপকারী হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে আনারসে থাকা পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যকর ভূমিকা রাখে। এই গরমে শরীরে পানিশূন্যতা রোধেও আনারস দারুণ কাজ করে, কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পানি ও ইলেকট্রোলাইট।
তবে আনারস খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। খালি পেটে বেশি খাওয়া ঠিক নয়, কারণ এতে অম্লতা হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পরিমাণমতো খাওয়া উত্তম, আর দাঁতের যত্নে খাওয়ার পর কুলি করা ভালো, কারণ এটি দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে।
আনারস কাটা টুকরো করে খাওয়া যায়, আবার স্মুদি, ফলের সালাদ বা জুস হিসেবেও এটি উপভোগ্য। কেউ কেউ রান্নাতেও আনারস ব্যবহার করে ভিন্ন স্বাদের খাবার তৈরি করেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, পরিমিত মাত্রায় নিয়মিত আনারস খেলে এটি হতে পারে গরমের দিনে আপনার শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য একটি দারুণ উপকারী ফল।