দেশে কাঁচা মরিচের অন্যতম প্রধান উৎপাদন ও মোকাম এলাকা হিসেবে পরিচিত বগুড়ায় হঠাৎ করেই মরিচ ও অন্যান্য সবজির দাম চড়া হয়ে উঠেছে। দুই সপ্তাহ আগেও যেখানে এক কেজি কাঁচা মরিচের পাইকারি দাম ছিল ৮০ টাকা, তা এখন গিয়ে ঠেকেছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। আর খুচরা বাজারে দেশি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে, যা দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
বগুড়ার মহাস্থান হাটে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রতি কেজি দেশি কাঁচা মরিচ ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়। এর আগে কিছুদিনের জন্য দাম বেড়ে ২৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। বর্তমানে দাম কিছুটা কমলেও এখনও তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে। ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচও এখন ১৬০-১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে মাঠে মরিচসহ বিভিন্ন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে উৎপাদন কমে গেছে এবং স্বাভাবিক সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটেছে। এই ঘাটতি থেকেই বাজারে চাহিদা বেশি, সরবরাহ কম—ফলে দাম বেড়ে গেছে।
বগুড়ার রাজাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী পরিমল প্রসাদ বলেন, “বৃষ্টির কারণে মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। উৎপাদন কম থাকায় সরবরাহও কমেছে। এ কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে মরিচের দাম একসঙ্গে বেড়েছে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে আসবে।”
শুধু মরিচ নয়, অন্যান্য সবজির বাজারেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। মহাস্থান হাটে পাইকারি পর্যায়ে গতকাল করলা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজিতে, বরবটি ৪২ টাকা এবং দেশি শসা ৬৫ টাকায়। অথচ দুই সপ্তাহ আগে এসব সবজি যথাক্রমে ৩০, ২৫ ও ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। এ ছাড়া মুলা, কচুর লতি, কচুমুখী, লাউ, চাল কুমড়া, বেগুন, পেঁপে, মিষ্টিকুমড়াসহ বেশির ভাগ সবজির দামই বেড়েছে।
হাটের এক পাইকারি ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সাধারণভাবে প্রতিদিন মহাস্থান হাটে ২০টি ট্রাকে সবজি আসে। কিন্তু গত কয়েক দিনে সেই পরিমাণ কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে—শুধু ১০টি ট্রাক আসছে। ফলে বাজারে ঘাটতি তৈরি হয়েছে এবং দাম বেড়েছে।”
বর্তমানে উৎপাদন স্বাভাবিক না হলে এবং আমদানি বাড়ানো না গেলে সামনের দিনগুলোতেও সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরবে না বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।