পোস্টে উমামা লিখেছেন, গ্রেপ্তার হওয়া কর্মীদের নিয়ে যেভাবে চারপাশে ‘আশ্চর্য হওয়া’র ভান করা হচ্ছে, তাতে তিনিই যেন সবচেয়ে কম বিস্মিত ব্যক্তি। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে এই ছেলেগুলোকে তিনি নেতাদের ছায়াসঙ্গী হিসেবে দেখে এসেছেন—সচিবালয়ের দফতর হোক বা রাজপথের মিছিল-মিটিং, এমনকি মারামারি-সংঘর্ষেও তাদের সক্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। সমন্বয়কদের প্রটোকল দিতে দিতে তারা হয়ে উঠেছিল অপ্রতিরোধ্য।
উমামা আরও জানান, এই ছাত্রদের বিরুদ্ধে গুলশান-বনানী ধাঁচের গ্যাং সংস্কৃতি, দুর্ব্যবহার ও চাঁদাবাজির একাধিক অভিযোগ আন্দোলনের ভেতরে অনেক আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল। বিশেষ করে অভিযুক্ত রিয়াদ নামের এক তরুণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ডিসেম্বরে রূপায়ন টাওয়ারে উশৃঙ্খল আচরণ করেছিল রিয়াদ। উমামা ও তার নারী সহকর্মীরা বাধা দিতে গেলে তাদের প্রতিও সে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। ঘটনার পর অনুসন্ধানে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে আগেও হুমকি, মারামারি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল।
পোস্টে তিনি বলেন, এসব ঘটনা তার কাছে একটুও অপ্রত্যাশিত ছিল না। বরং তখনই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মটি ভেতরে ভেতরে নষ্ট হতে শুরু করেছে। অভিযুক্তদের অবাধ যাতায়াত, দখলদারি মনোভাব এবং কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রবণতা ধীরে ধীরে একটি দমনমূলক সংস্কৃতির জন্ম দেয়। অভিযোগ জানালে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যেত না—বরং নীরবতা।
এ প্রসঙ্গে উমামা হতাশা প্রকাশ করে লেখেন, “এই প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালে এখন কোনো ভাষা খুঁজে পাই না। কে না নষ্ট করেছে একে নিজের মতো করে?” চাঁদাবাজির ঘটনার পর যেভাবে চারপাশের মানুষ ‘অবাক’ হওয়ার অভিনয় করছে, তা তার কাছে ‘হাস্যকর’ বলেই মনে হয়েছে।
সবশেষে উমামা বলেন, “দুঃখিত বন্ধুরা, এটাই প্রথমবার নয় যে তারা চাঁদাবাজি করেছে। এটাই প্রথমবার তারা পুলিশের হাতে ধরা খেল। ভালো করে খোঁজ নিলে দেখবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে।”
এই পোস্ট ঘিরে আন্দোলনের নেতৃত্ব, স্বচ্ছতা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধছে। প্ল্যাটফর্মের প্রতি যেসব মানুষের আশা ছিল, তারা আজ হতাশা আর সন্দেহের মধ্য দিয়ে পিছু তাকাচ্ছেন।