কারবালায় খাবার ছিল না, পানি ছিল না—সব বন্ধ করে দিয়েছিল ইয়াজিদের বাহিনী। খাবার এবং পানির বদলে যা পাওয়া গিয়েছিল, তা হলো তীর। শুধু ক্ষমতার জন্য।
কেবলমাত্র ক্ষমতা!
ক্ষমতা আসলে খুব সেন্সিটিভ বিষয়। ডরের বিষয়। যদি বোধসম্পন্ন হয়ে থাকেন, তাহলে বুঝতে পারবেন। আর না হলে কেউ-ই আপনাকে বোঝাতে সক্ষম হবে না। এখানে জবাবদিহিতার ব্যাপার আছে—জনগণ আর জনগণের মালিক, উভয়ের কাছেই আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে।
আপনি যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনোভাবে জনগণের কাছ থেকে রেহাই পেয়ে যান, তবুও জনগণের মালিক যিনি—তাঁর কাছ থেকে আপনি কখনোই রেহাই পাবেন না।
ক্ষমতার জন্য ইয়াজিদের বাহিনী কত নিষ্ঠুরতম কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা ইতিহাস সাক্ষী। আমরা এখনো সেই কারবালার স্মরণে রোনাজারি করি।
আর সেই কারবালার মতোই আজ দ্বিতীয় কারবালা সংঘটিত হচ্ছে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে। খাবার বন্ধ, পানি বন্ধ, সবকিছুই বন্ধ। ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে ঢেকে এনে ফিলিস্তিনিদের উপর বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে।
কে? কে করবে এর সমাধান?
যারা “মানবতা মানবতা” বলে ফেনা তুলে বিশ্বজুড়ে, সেই পশ্চিমারা?
যারা মানবতার ঢেউয়ে ভাসিয়ে দেয় পুরো বিশ্ব, কিন্তু ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে যাদের সেই ঢেউ পৌঁছায় না—তারা এর সমাধান করবে?
তাদের জন্যই কি বসে আছে আজকের মুসলিম মুজাহিদেরা?
এই সমস্যার সমাধান কখনোই হবে না, যদি অন্য প্রান্তের মুসলমানদের দুঃখ, দুর্দশা, অত্যাচার দেখার পরও ইসলামের প্রাণকেন্দ্র আরব—যেটা এখন কিছু নামধারী, লেবাসধারী শাসকদের হাতে বন্দি—তাদের হাতে থাকে।
কখনোই এর সমাধান হবে না।
আরব কেবল একটি দেশ নয়—এটি সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের প্রাণকেন্দ্র। আরবের সিংহাসনে একজন প্রকৃত মুসলমান কখনোই এমন একজন শাসক আশা করে না, যে কিনা সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের ভালোমন্দের চিন্তা না করে নিজের সিংহাসন টিকিয়ে রাখতেই ব্যস্ত থাকবে।
সেখানে জুলুমবাজ ইসরায়েল কীভাবে ইসলামী দেশসমূহের মাঝখানে অবস্থান করে, ইসলামী ভূখণ্ড দখল করে, মুসলমানদের উপর এমন বর্বরোচিত অত্যাচার চালায়?
এটি আরবসহ সমগ্র মুসলিম জাতির জন্য একটি লজ্জাজনক বিষয়।
লেখা : জয়নুল আবেদিন