Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ১১:১০ পূর্বাহ্ণ

আগামী ১১ দিন বিশেষ সতর্কতা জারি পুলিশের: সহিংসতা ও নৈরাজ্যের আশঙ্কা

News Image

টানা পনেরো বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার পর ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে প্রায় এক বছর পার করল আওয়ামী লীগ। তবে এই দীর্ঘ সময়েও তারা প্রকাশ্য রাজনীতির মাঠে ফিরতে পারেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দলটির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ছায়াময় তৎপরতা থেমে নেই—তারা দেশে-বিদেশে নানা ছদ্মবেশে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের দাবি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দলটির কিছু নেতা-কর্মী গোপনে একত্র হয়ে সহিংসতা বা রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা করতে পারে। বিশেষ করে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে কেন্দ্র করে বড় ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টির আশঙ্কায় দেশজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার (২৮ জুলাই) পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে দেশের বিভিন্ন ইউনিটে একটি গোপন বার্তা পাঠানো হয়েছে। বার্তাটি পাঠানো হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, বিভাগীয় উপ-পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম ও খুলনার স্পেশাল পুলিশ সুপারসহ দেশের সব জেলা পুলিশ সুপারের কাছে।

বার্তায় জানানো হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকেই নানা কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে ‘বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ ও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দারা।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বিতর্কিত রাজনৈতিক শক্তিগুলো এই সময়টিকে ব্যবহার করে অনলাইন ও অফলাইনে উসকানিমূলক প্রচারণা চালাতে পারে। একই সঙ্গে তারা ফ্যাসিবাদবিরোধী কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে অথবা সহিংস উত্তেজনা ছড়িয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টাও চালাতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে দেশের সব পুলিশ ইউনিটকে নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক গতিবিধির ওপর নিবিড় নজরদারি, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর তল্লাশি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ করে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের জন্য বিশেষ অভিযান চালানোর নির্দেশ রয়েছে। এই সময় ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি চালানো, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট ও বিমানবন্দর এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি মোবাইল টহলও জোরদার করা হবে।

এছাড়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাস্তবায়ন, সাইবার পেট্রলিং এবং গোয়েন্দা নজরদারিও চলবে জোরালোভাবে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, মাঠে সরব না থাকলেও আওয়ামী লীগের কিছু যুব ও ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা এখন ভার্চুয়াল জগতে ‘স্কোয়াড’ গঠন করে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, টেলিগ্রাম চ্যানেল ও ইউটিউব ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

সম্প্রতি এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন, “আওয়ামী লীগের দোসররা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে এনে রাজনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সরকার এ ষড়যন্ত্র কঠোর হাতে দমন করবে। যারা দেশে ও বিদেশে বসে অশান্তি ছড়ানোর পরিকল্পনায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Watermark