Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ০১:১৫ অপরাহ্ণ

ঢাবির ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন: সম্ভাব্য প্রার্থী ও বিশ্লেষণ

News Image

ঢাবির ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন: পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় শিক্ষার্থীদের আশা ও আস্থার পরিধি

গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে ক্যাম্পাস। গত ২০১৯ সালের নির্বাচনে অধিকাংশ পদে জয়ী হয়েছিল তৎকালীন ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের প্যানেল, তবে সহসভাপতি পদে জয়ী হয়েছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নূর। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত বছর বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে, যা ক্যাম্পাসেও নতুন শক্তির আবির্ভাব ঘটিয়েছে। এখন ছাত্রসংগঠনগুলো আসন্ন নির্বাচনে সম্মিলিত প্যানেল নিয়ে ভাবছে, যেখানে থাকবে স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থীরা।

নির্বাচনের সময়সূচী ও যোগ্যতার পরিবর্তন

সোমবার (২৯ জুলাই) ডাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত তফসিল ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ১৯ আগস্ট, চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ হবে ২৫ আগস্ট এবং ভোট গ্রহণ হবে ৯ সেপ্টেম্বর।

আগের নির্বাচনে প্রার্থীদের বয়সসীমা ছিল ৩০ বছর, কিন্তু এবার তা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন ছাত্র-ছাত্রীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। সান্ধ্যকালীন কোর্স, পেশাদার মাস্টার্স, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট বা ভাষা কোর্সের শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী হবেন না। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ।

এবারের নির্বাচনকে আরও অংশগ্রহণমূলক করতে হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে ছাত্রদের সুবিধার্থে বিভিন্ন আবাসিক হলকে নির্দিষ্ট কেন্দ্র হিসেবে বাছাই করা হয়েছে।

ছাত্রসংগঠনগুলো ও সম্ভাব্য প্রার্থী

তফসিল ঘোষণার পর বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন নিজেদের প্যানেল গঠন নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। দলীয় প্যানেলের বাইরে সম্মিলিত সাধারণ শিক্ষার্থী প্যানেলের দিকে ঝোঁক বেশি। জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রদের মধ্যে অনেকে এবার নির্বাচনে নামার কথা ভাবছেন।

সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখপাত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃত্বসহ বাম ও ইসলামি ছাত্র সংগঠনের নেতারা রয়েছেন।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ছাত্রদের প্রত্যাশা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দ্রুত করার জন্য চাপ প্রয়োগের পর তফসিল ঘোষণা হলেও কিছু শিক্ষার্থী মনে করছেন প্রশাসন এখনও পুরোপুরি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি। ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রশাসনের কাঠামো সংস্কারের দাবি জানিয়েছে, যা এখনও অনুপূর্ণ রয়েছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের বলেন, “নির্বাচনে উচ্ছ্বাস রয়েছে, তবে তা যেন হতাশায় রূপ না নেয়, প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে।” ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম স্বাগত জানিয়ে বলেন, “প্রতিটি ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন হওয়া উচিত।”

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ বলেন, “নির্বাচনে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা খুব জরুরি, যেন কোনো গোষ্ঠী অবৈধ প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।”

Watermark