গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজি করার সময় গ্রেপ্তার হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদের বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার একটি চেক উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে ডিএমপির এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

ডিএমপির মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ৫০ লাখ টাকার চাঁদা দাবির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে চেকটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কলাবাগান থানায় নতুন মামলা রুজু করা হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১১টা পর্যন্ত রিয়াদের বাসায় অভিযান চালিয়ে ওই দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক পাওয়া যায়, যা আগামী মাসের ২ তারিখ ক্যাশ হওয়ার কথা ছিল। চেকটি একটি ব্যবসায়ীর জমি উদ্ধারের বিষয়ে রিয়াদের সঙ্গে করা পাঁচ কোটি টাকার চুক্তির অংশ হিসেবে ছিল।

রিয়াদের বাসা থেকে আরও অন্তত ১০টি এফডিআরের কাগজ পাওয়া গেছে, যেগুলোতে সর্বনিম্ন দুই লাখ টাকা করে জমা রয়েছে। এছাড়া, একটি বেসরকারি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গত কয়েক মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার লেনদেনের প্রমাণও পুলিশের হাতে এসেছে।

২৬ জুলাই সন্ধ্যায় গুলশান-২ এর ৮৩ নম্বর রোডের বাসায় চাঁদা আদায়ের সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে পাঁচজন। তাদের নাম— মো. সাকাদাউন সিয়াম (২২), সাদমান সাদাব (২১), মো. আমিনুল ইসলাম (১৩), ইব্রাহীম হোসেন (২৪) ও আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ (২৫)।

রিয়াদ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা এবং ঢাকার ধানমন্ডির নিউ মডেল এলাকায় বসবাস করেন। ইব্রাহীম চাঁদপুরের রামদাসদী গ্রামের, আর আমিনুল ঢাকার বাড্ডার আলাতুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ইব্রাহীম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ছিলেন।

ঘটনার পর সংগঠন থেকে তিনজনকে বহিষ্কার করা হয় এবং কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীত সারাদেশের সব কমিটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৭ জুলাই সকালে রিয়াদ ও অপু নামের এক ব্যক্তি শাম্মী আহমেদের গুলশানের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দাবি করেন। টাকা না দিতে পারায় হুমকি দেওয়া হয় এবং ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। পরে ২৬ জুলাই আবার বাকি ৪০ লাখ টাকা দাবিতে গেলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করে।

এরপর ২৭ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমান সভাপতি রিফাত রশিদ জানান, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো ছাত্র সংগঠন অপরাধের দায় স্বীকার করে কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারাদেশের সব কমিটি স্থগিত করেছে।’

তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলের শেল্টারে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নিক।”