Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১০:১৬ অপরাহ্ণ

সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ ও উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান

News Image

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে বিতাড়িত ফ্যাসিস্ট অপশক্তি আবারও রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ নিতে ওত পেতে আছে।” তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, সরকারের কোনো ভুল সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে, যার ফলে দেশে আবারও ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এ বিষয়ে বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান তিনি।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার দারুল ইহসান মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪’ স্মরণে এক সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের শুরুতে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “জুলাই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। সাভার-আশুলিয়ায় তাদের রক্তে গণঅভ্যুত্থান রচিত হয়েছে। হত্যার পর শ্রমিকদের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল এমন বর্বরতা কারবালার নির্মমতাকেও হার মানায়।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “শ্রমজীবী মানুষরা যদি জানতে চায়, সেই আত্মত্যাগের বিনিময়ে তারা আজ রাষ্ট্র ও প্রশাসনে কোথায় দাঁড়িয়ে? পলাতক ফ্যাসিস্টদের হটিয়ে যে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ চলছে, সেখানে তাদের প্রতিনিধিত্ব কোথায়?”

রাজনীতিতে গণতন্ত্রের ভূমিকা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, “একজন নাগরিকের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগের অন্যতম মাধ্যম হলো নির্বাচন। জনগণ যেন সরাসরি ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে, সেই লক্ষ্যে বিএনপি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অংশ বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। শিক্ষা, স্থানীয় সরকার, জাতীয় নির্বাচন সব ক্ষেত্রেই বিএনপি চায় জনগণের প্রতিনিধিত্ব। কিন্তু সরকার সে সুযোগ দিচ্ছে না।”

শহীদ পরিবারগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “আপনাদের স্বজনের আত্মত্যাগ এই দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছে। আমরা ক্ষমতায় গেলে সাভার-আশুলিয়া বা সুবিধাজনক স্থানে শ্রমজীবী শহীদদের স্মরণে একটি বিশেষ স্থাপনা নির্মাণ করবো।”

সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে কোনোভাবে গণতন্ত্র ব্যাহত না হয়। ছোটখাটো ইস্যুতে এমন পরিস্থিতি তৈরি করবেন না যাতে আবার সেই ফ্যাসিস্ট হাসিনা ফিরে আসার সুযোগ পান।”

তিনি অভিযোগ করেন, “সরকার শহীদ ও আহতদের পরিবারকে প্রতিশ্রুত অনুদান ও চিকিৎসা সহায়তা এখনও বাস্তবায়ন করেনি। সরকার বলেছিল, প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ১০ লাখ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করা হবে, কিন্তু তা কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে, আমরা জানি না।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “ক্ষমতায় টিকে থাকতে শেখ হাসিনা গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। এখন ভারতে পালিয়ে থেকে অডিও ভিডিও বার্তা দিয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জে তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। জাতিকে রক্ষা করতে সবাইকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আমানুল্লাহ আমান, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, তমিজ উদ্দিনসহ জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা।

Watermark