ভারতে এক অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে যাত্রীদের মধ্যে বিরল এক ঘটনায় চড় খাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন ৩২ বছর বয়সী হুসেইন আহমেদ মজুমদার। ঘটনাটি ঘটে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে, যা মুম্বাই থেকে কলকাতা হয়ে আসাম রাজ্যের শিলচরের উদ্দেশে যাত্রা করছিল।
হুসেইনের পরিবার জানিয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে কাজ করতেন এবং আগেও একাধিকবার এই একই রুটে বিমানে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু এবার আর বাড়ি ফেরা হলো না তাঁর।
ফ্লাইট চলাকালীন মাঝআকাশে হঠাৎ আতঙ্কে ভেঙে পড়েন হুসেইন, যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় প্যানিক অ্যাটাক বলা হয়। এমন অবস্থায় কেবিন ক্রুরা তাঁকে সাহায্য করার চেষ্টা করছিলেন। ঠিক তখনই পাশের আসনে থাকা অপর এক যাত্রী হাফিজুল রহমান আচমকা হুসেইনকে চড় মেরে বসেন। এই অনাকাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটি বিমানের অন্য এক যাত্রী মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন, যা পরে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, কেবিন ক্রুরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন এবং অন্য এক যাত্রী হাফিজুলের এই আচরণের প্রতিবাদ করছেন, জিজ্ঞেস করছেন, “আপনি কেন তাঁকে মারলেন?”
ফ্লাইটটি কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর অভিযুক্ত হাফিজুল রহমানকে নিরাপত্তা বাহিনী সিআইএসএফ-এর মাধ্যমে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে তাঁকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
এদিকে হুসেইনকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। শিলচরে নির্ধারিত সময়ে না পৌঁছানোয় পরিবারের সদস্যরা চিন্তায় পড়ে যান। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর পরিবারের লোকজন জানান, হুসেইন বাড়িতে আসেননি, ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। শিলচর বিমানবন্দরে অপেক্ষায় থাকা আত্মীয়রাও তাঁকে খুঁজে পাননি। ভাইরাল ভিডিও দেখে তাঁরা নিশ্চিত হন যে ওই ব্যক্তিই হুসেইন, কিন্তু এরপর তাঁর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ এবং সিআইএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তবে কেউই হুসেইনের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি। এ নিয়ে কাছাড় জেলার উদারবন্দ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
ইন্ডিগো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমানে আচরণগত সমস্যা করায় সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে চড় খাওয়া হুসেইনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি সংস্থাটি।
হুসেইনের পরিবারের দাবি, একটি দুর্ঘটনাজনিত মানসিক বিপর্যয়ের জন্য যাঁকে সাহায্য করা দরকার ছিল, তাঁকে মারধর করা হয়েছে, এবং এখন তিনি নিখোঁজ। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে।