অভিনেতা ধানুশ ও পরিচালক আনন্দ এল. রাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাদের ২০১৩ সালের চলচ্চিত্র ‘রাঞ্জনা’র এআই ব্যবহার করে তৈরি করা একটি পরিবর্তিত সংস্করণ নিয়ে। এই সংস্করণে সিনেমার মূল ক্লাইম্যাক্স পরিবর্তন করে একটি “সুখী সমাপ্তি” যোগ করা হয়েছে, যা সিনেমাটির মৌলিক ভাব ও আত্মাকে নষ্ট করেছে বলে মনে করছেন এর নির্মাতারা।
ধানুশ জানান, তার স্পষ্ট আপত্তি সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো এ সংস্করণ মুক্তি দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “রাঞ্জনা’র এআই পরিবর্তিত ক্লাইম্যাক্স আমাকে সম্পূর্ণরূপে বিচলিত করেছে। এই বিকল্প সমাপ্তি সিনেমাটির আত্মাকে ছিনিয়ে নিয়েছে। আমি যে সিনেমাটিতে ১২ বছর আগে অভিনয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, এটি তা নয়।”
ধানুশ আরও বলেন, “চলচ্চিত্র বা যেকোনো সৃষ্টিশীল কনটেন্ট পরিবর্তনে এআই ব্যবহারের প্রবণতা শিল্প ও শিল্পীদের জন্য গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এটি গল্প বলার স্বাভাবিক ধারা এবং সিনেমার উত্তরাধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছে। আমি আশা করি ভবিষ্যতে এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।”
পরিচালক আনন্দ এল. রাইও এই ঘটনা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে জানান, “গত তিন সপ্তাহ আমার জন্য অবাস্তব ও বেদনাদায়ক ছিল। এত যত্ন, দ্বন্দ্ব, সহমর্মিতা ও সৃজনশীল ঝুঁকি নিয়ে যে কাজটি তৈরি হয়েছিল, তা আমার অজান্তে বদলে দেওয়া, নতুনভাবে সাজিয়ে আবার মুক্তি দেওয়া হয়েছে, এটা হৃদয়ভাঙার মতো একটি অভিজ্ঞতা।”
তিনি বলেন, “এই কাজটা সিনেমার মূল অভিপ্রায়, প্রেক্ষাপট ও আত্মাকে ধ্বংস করেছে। বিষয়টি আরও হতাশাজনক যে, এতো গা-ছাড়া ভঙ্গিতে এটা করা হয়েছে।”
‘রাঞ্জনা’র এই পরিবর্তিত সংস্করণ নিয়ে চলচ্চিত্র জগতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। নীরজ পাণ্ডে, কানিকা ধিলন ও তনুজ গার্গসহ অনেকেই ধানুশ ও রাইয়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং এই এআই পরিবর্তনকে অনৈতিক ও সৃষ্টিশীলতা বিনষ্টকারী কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
‘রাঞ্জনা’ সিনেমাটি ধানুশ ও সোনম কাপুরকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছিল এবং মুক্তির পর থেকেই সমালোচক ও দর্শক উভয়ের প্রশংসা অর্জন করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি একটি কাল্ট ক্লাসিক হিসেবে পরিচিতি পায়।