২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ছিল বিএনপির মতে ফ্যাসিস্ট-মুক্তির এক বছর পূর্তির দিন। এই দিনে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০২৪ সালের এই দিনেই দেশের জনগণ, বিশেষ করে ছাত্র-জনতা, রক্ত দিয়ে এক ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছিল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে যারা জীবন দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, তাদের প্রতি আমরা গভীর শ্রদ্ধা জানাই। যারা আহত হয়েছেন বা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তারাও আমাদের সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সালাহউদ্দিন জানান, গত এক বছর ধরে দেশে সংস্কারমূলক আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পরিবর্তনের পথ তৈরি হয়েছে। সংস্কার কমিশনের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে অনেক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বিএনপি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগিরই এসব ঐকমত্য লিখিতভাবে স্বাক্ষরিত ও বাস্তবায়িত হবে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই সংস্কার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির মধ্যে গড়ে ওঠা ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য আরও দৃঢ় হবে এবং বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাবে।
তিনি জানান, সেদিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল প্রধান উপদেষ্টার দুটি ঘোষণা
প্রথমত, জুলাই ঘোষণাপত্র
দ্বিতীয়ত, জাতির উদ্দেশে ভাষণে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা
এই দুই ঘোষণাকেই বিএনপি স্বাগত জানিয়েছে। সালাহউদ্দিন বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, তা আমরা আগেও সমর্থন করেছি এবং এখনও সমর্থন করছি।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের ‘জাতীয় বীর’ মর্যাদা দেওয়া আমাদের প্রাণের দাবি। আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রাষ্ট্রীয় সহায়তা ও আইনি সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টা যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তেমনি আমরাও তা সমর্থন করছি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠাবেন এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, অর্থাৎ রমজান মাস শুরুর আগেই নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এই ঘোষণার জন্য জাতি অপেক্ষা করছিল। এখন আর কোনো দোদুল্যমানতা বা অনিশ্চয়তা রইল না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, এই ঘোষণার মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও সুদৃঢ় হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে আস্থা ফিরবে, বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে। এখন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে আমরা আশাবাদী। আর সেই নির্বাচনের জন্য জাতিকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।