Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ৬ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫৫ অপরাহ্ণ

দইয়ের ৬টি আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্যগুণ

News Image

মানবসভ্যতার ইতিহাসে দই একটি প্রাচীন খাদ্য। শত শত বছর ধরে মানুষ দই খেয়ে আসছে—শুধু স্বাদের জন্য নয়, বরং পুষ্টিগুণের জন্যও। আধুনিক গবেষণা বলছে, নিয়মিত দই খেলে হৃদরোগ, হাড় ক্ষয় এবং অতিরিক্ত ওজনজনিত সমস্যার ঝুঁকি কমে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক।

দই কীভাবে তৈরি হয়?

দই মূলত দুধের একটি ব্যাকটেরিয়া-গাঁজনজাত খাদ্য। এতে ব্যবহৃত ব্যাকটেরিয়াগুলোকে বলা হয় “ইয়োগার্ট কালচার”। তারা দুধে থাকা প্রাকৃতিক চিনিজাত উপাদান ল্যাকটোজকে গাঁজিয়ে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি করে। এই প্রক্রিয়ায় দুধ জমে দইয়ের ঘনত্ব ও টক স্বাদ তৈরি হয়।

সব ধরনের দুধ থেকে দই বানানো যায়। স্কিম দুধ থেকে তৈরি দইতে চর্বি থাকে না, আর ফুল ফ্যাট দুধ থেকে তৈরি হলে সেটি পূর্ণচর্বিযুক্ত দই হয়।

দইয়ের স্বাস্থ্যগুণ

১. দই পুষ্টিতে ভরপুর:
এক কাপ দই থেকে দৈনিক ক্যালসিয়ামের প্রায় অর্ধেক পাওয়া যায়। এটি দাঁত ও হাড় মজবুত রাখে। দইয়ে ভিটামিন বি১২ ও রিবোফ্ল্যাভিনও থাকে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এছাড়া এতে রয়েছে ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম, যেগুলো রক্তচাপ ও হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

২. প্রোটিনে সমৃদ্ধ:
এক কাপ (প্রায় ২৩০ গ্রাম) দইয়ে প্রায় ১২ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এই প্রোটিন মেটাবলিজম বাড়ায় এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গ্রিক দইয়ে প্রোটিন আরও বেশি থাকে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।

৩. হজমে সহায়ক:
যেসব দইয়ে জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া বা প্রোবায়োটিক থাকে, তা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। বিশেষ করে ‘ল্যাকটোব্যাসিলাস’ ও ‘বিফিডোব্যাকটেরিয়া’ নামক প্রজাতি ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS)-এর মতো সমস্যা উপশমে সাহায্য করতে পারে।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
প্রোবায়োটিক যুক্ত দই নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে। দইয়ে থাকা সেলেনিয়াম, জিঙ্ক ও ম্যাগনেশিয়াম রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখে। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ দই সাধারণ ঠান্ডা ও ফ্লু থেকেও সুরক্ষা দিতে পারে।

৫. হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক:
আগে মনে করা হতো, দইয়ের চর্বি হৃদরোগ বাড়ায়। কিন্তু এখন গবেষণায় দেখা গেছে, পূর্ণচর্বিযুক্ত দই HDL (ভালো কোলেস্টেরল) বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া দই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।

৬. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে:
দইয়ের প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম শরীরে হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে, যা ক্ষুধা কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত দই খান, তাদের ওজন, বডি ফ্যাট ও কোমরের মাপ তুলনামূলকভাবে কম হয়।

তবে কিছু সতর্কতাও জরুরি:

কোন দই সবচেয়ে ভালো?

সেরা পছন্দ হবে “প্লেইন, আনসুইটেনড” দই -অর্থাৎ, এমন দই যাতে চিনি বা কৃত্রিম উপাদান নেই এবং প্রোবায়োটিক আছে। চাইলে ফল, বাদাম বা বীজ মিশিয়ে স্বাদ বাড়ানো যায়।


দই একটি পুষ্টিকর ও উপকারী খাদ্য। এটি নিয়মিত খেলে হজম, রোগপ্রতিরোধ, হৃদরোগ ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। তবে কিনতে গেলে সতর্কভাবে পড়ুন উপাদান তালিকা তবেই মিলবে প্রকৃত স্বাস্থ্যগুণ।

Watermark