বাংলাদেশের নানা প্রান্তে গরুর নলির ভেতরের অংশ বা অস্থিমজ্জা অনেকের কাছে জনপ্রিয় খাবার। বিশেষত ‘নলি’ বা হাড়ের ভেতরের নরম অংশকে অনেকেই ক্যালসিয়ামের সমৃদ্ধ উৎস মনে করে খেয়ে থাকেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
পশুচিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, গরুর নলির ভেতরের অংশ আসলে অস্থিমজ্জা, যা মূলত চর্বি ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত। এতে ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অথচ অনেকেই ধারণা করে থাকেন, যেহেতু এটি হাড়ের ভেতর থাকে, তাই ক্যালসিয়ামও এতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।
ঢাকার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিসম্পদ বিভাগের এক অধ্যাপক জানান, “অস্থিমজ্জা মূলত শক্তি ও কিছু প্রোটিন দেয়, কিন্তু ক্যালসিয়ামের জন্য এটি নির্ভরযোগ্য উৎস নয়। ক্যালসিয়াম পেতে হলে দুধ, ছোট মাছ, ডিমের খোসা প্রক্রিয়াজাত গুঁড়া বা শাকসবজি খাওয়া উচিত।”
পুষ্টিবিদরা সতর্ক করে বলছেন, নলির প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়াতে পারে। এতে থাকা অতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
তবুও অনেক রেস্তোরাঁ ও গৃহস্থের রান্নাঘরে ‘নলি ভুনা’ বা ‘নলি স্যুপ’ বিশেষ পদের মর্যাদা পেয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাদ বা পছন্দের জন্য এটি খাওয়া যেতে পারে, কিন্তু ক্যালসিয়ামের জন্য নয়।
অতএব, যারা নলি খেয়ে ক্যালসিয়াম পাওয়ার আশা করেন, তাদের জন্য এটি হতাশার খবর। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে বিজ্ঞানসম্মত ও স্বাস্থ্যকর উৎস বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।