ঢাবি শিবিরের সভাপতির দাবি: হলে কমিটি নেই, সেবামূলক কার্যক্রম নিয়েই ভুল প্রচার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রশিবিরের কোনো রাজনৈতিক কমিটি নেই বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ। তার দাবি, শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও মতামতের ভিত্তিতে কেবল কিছু সেবামূলক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ বলেন, শিবির হলে হলে রাজনীতির বিরোধী এবং বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক ছাত্ররাজনীতিতে বিশ্বাসী। বর্তমানে তারা কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন না, বরং তীব্র গরমে পানির ফিল্টার স্থাপন, স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন, নববর্ষে উপহার বিতরণসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করছেন। এসব কাজে কিছু আবাসিক শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যুক্ত ছিলেন, যা নিয়ে ‘ভুল ব্যাখ্যা’ দিয়ে একটি মহল প্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “কিছু পক্ষ এমনভাবে প্রচার করছে যেন হলে হলে শিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আছে। বাস্তবে, সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা নেওয়া হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা যদি এসব সেবা না চান, আমরা তা বন্ধ করে দেব।”
সম্প্রতি মাস্টারদা সূর্য সেন হলে শিবিরের স্থাপন করা পানির ফিল্টার ভাঙচুরের ঘটনা এবং রোকেয়া হলে তাদের দেওয়া ফিল্টার, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভেন্ডিং মেশিন ও ছাত্রদলের দেওয়া ডাস্টবিন বয়কটের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে ফরহাদ জানান, সব ফিল্টার শিক্ষার্থীদের মতামত ও হল প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে, সংগঠনের প্রাক্তন সদস্যদের অর্থায়নে স্থাপন করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা যদি আপত্তি করেন, সংগঠন তা সরিয়ে নেবে।
শিবির সম্পর্কে সমালোচনামূলক মন্তব্যের জবাবে ফরহাদ বলেন, “আমরা আমাদের নিজস্ব গঠনতন্ত্র ও নীতিমালা অনুযায়ী চলব। কারও বিকৃত বা মনগড়া মতামতের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালিত হবে না।”
এদিকে শুক্রবার রাতেই ঢাবির রোকেয়া হল থেকে তালা ভেঙে বেরিয়ে আসা শিক্ষার্থীরা হলে হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন। ‘হল পলিটিক্স নো মোর’ ও ‘শিক্ষা ও রাজনীতি একসাথে চলে না’ স্লোগানে তারা ক্যাম্পাস মুখর করে তোলেন। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, হলভিত্তিক রাজনীতি সহিংসতা, গেস্টরুম সংস্কৃতি ও কৃত্রিম সিট সংকট সৃষ্টি করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। তারা হলের ভেতরে রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধের দাবি জানান।
বিক্ষোভের মুখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান রাত ২টার দিকে এসে জানান, গত বছরের ১৭ জুলাই হলে হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে এবং হল প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা ‘পূর্ণাঙ্গ নো হল পলিটিক্স’ বাস্তবায়নের দাবি অব্যাহত রাখেন।