Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১২ অপরাহ্ণ

এনআইডি কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবায় কোটি কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে

News Image

নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে স্মার্ট এনআইডি কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবায় কোটি কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এ বিষয়ে বেশকিছু অভিযোগ জমা পড়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বহিরাগত দালালদের অংশগ্রহণে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠা, যা এই অবৈধ লেনদেন চালিয়ে যাচ্ছে।

দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ)’ প্রকল্পের আউটসোর্সিং কর্মচারীদের মধ্যে একজনের ব্যাংক ও বিকাশ হিসাব থেকে বেতনের বাইরে প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে। এ ধরনের অস্বাভাবিক লেনদেনের উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। একই প্রকল্পে নিযুক্ত আরও কয়েকজন কর্মীর হিসাবেও কোটি টাকার লেনদেন মিলেছে।

তদন্তে উঠে এসেছে, সেবাপ্রত্যাশীদের এনআইডি সংশোধন ও স্মার্ট কার্ড প্রিন্টের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ আদায়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনৈতিক উপার্জনের সুযোগ তৈরি করেছেন। ঢাকায় কর্মরত কর্মকর্তারা এনআইডি সংশোধনে নেটওয়ার্কের সদস্য ও দালালদের মাধ্যমে ফাইল হাতে হাতে নিয়ে গিয়ে অনুমোদন করেন এবং এর বিনিময়ে ভাগাভাগি করে টাকা গ্রহণ করেন। কিছু ক্ষেত্রে এই লেনদেন ব্যাংক, বিকাশ ও নগদ মাধ্যমে হয়। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই অর্থে ঢাকায় ফ্ল্যাট, গাড়ি ও দামি মোটরসাইকেল কিনেছেন।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ও সংগ্রহে ঘুষ গ্রহণ, হয়রানি ও দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে দুদকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে এবং তদন্তও চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ২৩ জুন দুর্নীতি তদন্তকারী দল দেশের ১৩টি জেলা নির্বাচন অফিসে অভিযান চালায়। রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও জামালপুরের এসব অফিসে ঘুষ গ্রহণ, হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। রংপুর জেলা নির্বাচন অফিসে ছদ্মবেশে অভিযান চালানো টিম সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি ও অনিয়মের প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফিকেশনের সরকারি ফি অনলাইনে জমা দিতে হয়, কিন্তু কিছু অসাধু কর্মকর্তা নগদ অর্থ নিচ্ছেন এবং রশিদ দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বর্তমানে আইডিইএ-২ প্রকল্পে আউটসোর্সিংয়ে ২২০০-এর বেশি জনবল কাজ করছে। নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও এতে দায়িত্ব পালন করছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। দুর্নীতির বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট

Watermark