রংপুরের তারাগঞ্জে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (ভ্যান) চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন-রূপলাল দাস (৪০) ও প্রদীপ দাস (৪৫), তারা সম্পর্কে জামাই ও শ্বশুর।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার (৯ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায়। রোববার দুপুরে নিহত রূপলালের স্ত্রী মালতী রাণী দাস থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার সূত্রপাত
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, রূপলালের ভাগ্নির জামাই প্রদীপ দাস মিঠাপুকুর থেকে নিজের অটোরিকশা চালিয়ে শ্বশুরবাড়ি আসছিলেন। পথ ভুলে তিনি বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় পৌঁছে রূপলালকে ফোন করেন। পরে রূপলাল সেখানে গিয়ে প্রদীপের সঙ্গে দেখা করে একই অটোরিকশায় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
পথিমধ্যে স্থানীয়রা তাদের ভ্যানচোর সন্দেহে আটক করে। এ সময় প্রদীপের অটোরিকশায় থাকা একটি বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল উদ্ধার হয়। একটি বোতলের ঢাকনা খোলার পর ভেতরের তরলের গন্ধে দুজন স্থানীয় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে চুরি ও অজ্ঞানপার্টির সন্দেহ আরও বেড়ে যায় এবং উত্তেজিত জনতা তাদের পিটুনি শুরু করে।
মৃত্যু ও পরবর্তী পরিস্থিতি
গণপিটুনিতে গুরুতর আহত অবস্থায় রাত ১১টার দিকে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে রূপলাল দাসকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে রোববার ভোরে তিনিও মারা যান।
ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়রা মরদেহ নিয়ে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। রাত ৭টা ৪০ মিনিটে পুলিশের অনুরোধে অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
পুলিশের বক্তব্য
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম.এ. ফারুক বলেন, “গণপিটুনিতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত রূপলালের স্ত্রী হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে।”