Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১৭ অপরাহ্ণ

বিলাসী জীবন থেকে কাঠগড়ায়—জামিন চেয়ে আদালতে কান্না মতিউরের

News Image

গত বছরের কোরবানি ঈদের আগে ছেলের ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কেনার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় আসেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান। ঘটনাটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই তিনি ও তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ গ্রেপ্তার হন। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে তাঁদের ভিন্ন রূপে দেখা যায়।

দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে আসামির কাঠগড়ায় বসা মতিউরের মুখে ছিল লম্বা দাড়ি ও মাস্ক। একই বেঞ্চের এক প্রান্তে বসেছিলেন তাঁর স্ত্রী লায়লা কানিজ। আদালতে তাঁরা মৃদু স্বরে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। কিছুক্ষণ পরই তাঁদের দুর্নীতির মামলার শুনানি শুরু হয়।

প্রথমে মতিউরের আইনজীবী আদালতের কাছে জামিনের আবেদন করে বলেন, তাঁদের মক্কেল দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন এবং পলাতক হবেন না। এরপর মতিউর নিজেও কথা বলার অনুমতি চান। আদালতের অনুমতি পেয়ে তিনি জানান, কারাগারে থাকা অবস্থায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যাতে ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। তিনি আদালতের হাতে সেই চিঠি জমা দেন।

আবেগঘন কণ্ঠে মতিউর বলেন, গ্রেপ্তারের দিন তাঁর বাবা মারা যান, পরে মা স্ট্রোক করেন, সংসার ভেঙে গেছে। দুই হাত জোড় করে আদালতের কাছে অনুরোধ করেন, চিঠিটি পড়ার জন্য। তিনি আরও বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তা থাকাকালে একজন সামরিক কর্মকর্তার রোষানলে পড়েছিলেন, যাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

আদালত তাঁর বক্তব্য শোনার পর জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ৫৩ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগসহ একাধিক দুর্নীতির মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। সত্য উদঘাটনের জন্য প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং ধৈর্য ধরতে হবে। আদালত জামিন নাকচ করে মতিউর ও তাঁর স্ত্রীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, মতিউর বর্তমানে কিশোরগঞ্জ কারাগারে এবং তাঁর স্ত্রী কাশিমপুর মহিলা কারাগারে রয়েছেন। প্রথম স্ত্রীর ছেলে-মেয়ে বিদেশে পলাতক, দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলীও বিদেশে। তাঁর ছেলে মুশফিকুর রহমানই গত বছর ১৫ লাখ টাকায় ‘উচ্চবংশীয়’ ছাগল কিনেছিলেন, যা ভাইরাল হয়। সেই ঘটনার পর মতিউর ও পরিবারের বিলাসী জীবনযাপন এবং বিপুল সম্পদের তথ্য সামনে আসে-যার মধ্যে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলোবাড়ি ও জমি রয়েছে।

দুদকের তদন্তে এসব সম্পদের খোঁজ মেলে এবং আদালত সেগুলো ক্রোকের আদেশ দেন। মতিউর, তাঁর দুই স্ত্রী, সন্তান ও ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে দুদকের চারটি মামলা এখনো তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে, পাশাপাশি অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা বিচারাধীন।

Watermark