Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ

তফসিলের আগে সরকার ছাড়ার ঘোষণা আসিফ মাহমুদের

News Image

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের সঞ্চালনায় এক টকশোতে তিনি এ ঘোষণা দেন।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৮ সাল থেকে তিনি রাজনীতিতে যুক্ত আছেন। তাঁর মতে, নির্বাচনের সময় রাজনীতিতে সক্রিয় কেউ সরকারের পদে থাকা উচিত নয়। তাই তিনি তফসিল ঘোষণার আগেই স্বেচ্ছায় পদ ছাড়বেন। তবে তিনি এখনো স্পষ্ট করেননি, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না বা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেবেন কি না।

টকশোতে একক অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন ও এক বছরের কার্যক্রম, সেনাবাহিনীর ভূমিকা, জুলাই আন্দোলনের মিত্র দলের বিভাজন, আসন্ন নির্বাচন, নিজের রাজনৈতিক অবস্থান এবং কুমিল্লার মুরাদনগরের সাম্প্রতিক ঘটনাসহ নানা বিষয়ে বক্তব্য দেন।

তিনি জানান, পতাকাবাহী গাড়ি বা ক্ষমতার মোহে নয়, বরং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকার কারণেই তিনি সরকারে যুক্ত আছেন। এখনও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি আছে যেমন জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন। এগুলো সম্পন্ন না করলে ঐতিহাসিক দায় থেকে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

কয়েক মাস আগে প্রচারিত একটি ভিডিওতে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রথমে মেনে নিতে চাননি বলে উল্লেখ করেছিলেন আসিফ মাহমুদ। টকশোতে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটি সরকার গঠনের আগের ঘটনা। বৈঠকে সেনাপ্রধান ইউনূসের বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন, কারণ আওয়ামী লীগ তাঁর সমর্থক নয়। পরে মেনে নিলেও ‘বুকে পাথর চাপা’ মন্তব্য করেছিলেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাঁর বা সরকারের ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই; দ্বিমত ছিল শুধু আওয়ামী লীগ বিষয়ক ইস্যুতে।

অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে একাধিক ক্ষমতার কেন্দ্র থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর সামরিক বাহিনী ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তিও সক্রিয় রয়েছে। তাঁর ভাষায়, ড. ইউনূস সরকারের ভেতরও একাধিক সরকার চলছে। এছাড়া একটি মহল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে এনে প্রধান বিরোধীদল হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে এবং কিছু আওয়ামী লীগ নেতাকে ওই দলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

স্থানীয় সরকারের সেবা ব্যাহত হওয়ার জন্য নিজের ওপর দায় আসছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আসিফ মাহমুদের দাবি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে, তবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজন তাদের হাতে নেই। সব দল রাজি থাকলেও বিএনপি ও কিছু সহযোগী দল এতে সম্মতি দিচ্ছে না।

এ সময় মুরাদনগরে মব লাঞ্চন, শিক্ষক নিপীড়ন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে জড়িতদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তাঁর বাবা বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অপপ্রচার, এবং তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

এছাড়া আসন্ন নির্বাচনে মুরাদনগর থেকে অংশ নেওয়ার গুঞ্জন নাকচ করে তিনি জানান, জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করাই তাঁর লক্ষ্য। স্থানীয় পর্যায়ে প্রার্থী হওয়া তাঁর জন্য সুবিধাজনক নয়; ঢাকাই হবে তাঁর রাজনৈতিক গন্তব্য।

Watermark