Top Header
Author BartaLive.com
তারিখ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১০ অপরাহ্ণ

স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো নিষ্ক্রিয় থাকায় সাদাপাথর লুটপাট রোধ করা সম্ভব হয়নি-দুদকের উপপরিচালক

News Image

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র থেকে রাষ্ট্রীয় পাথর অবৈধভাবে উত্তোলনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়েছে। এ অভিযান পরিচালিত হয় পাথর লুট ও অবৈধ উত্তোলনের ঘটনা তদন্ত ও দোষীদের শনাক্ত করার জন্য।

বুধবার (১৩ আগস্ট) বেলা দুইটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত দুদকের পাঁচ সদস্যের একটি দল পরিদর্শন কার্যক্রম চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস্ সাদাৎ। প্রাথমিকভাবে তারা লুটপাটের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন এবং কারা এতে সম্পৃক্ত ছিলেন তা শনাক্তের কাজ শুরু করেছেন।

দুদকের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস্ সাদাৎ বলেন, “লুটপাটে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রভাবশালী ব্যক্তি, পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জড়িত ছিলেন। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো নিষ্ক্রিয় থাকায় লুটপাট রোধ করা সম্ভব হয়নি। অভিযানের পর দুদক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”

দুদক সূত্র জানায়, দল সরেজমিনে গিয়ে দেখেছে, স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন সেবা সচল রয়েছে। নদীর তীরেই বিজিবি ক্যাম্প রয়েছে এবং বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। তবে বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী ও প্রশাসনের অবহেলায় পাথর উত্তোলন অব্যাহত ছিল। চুরি করা পাথর স্থানীয় পাথর ভাঙার যন্ত্রে ভেঙে ফেলা হতো, যাতে চুরির প্রমাণ লোপ পায়।

একই সময়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত সাদাপাথর ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় কালাইরাগ এলাকা থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়। পাশাপাশি কলাবাড়ি এলাকায় পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহার জানান, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসন অভিযান চালাচ্ছে। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় সেনাবাহিনী সহায়তা প্রদান করছে।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ের বল্লাঘাট, ঝুমপাহাড় ও জিরো পয়েন্ট এলাকায়ও সকাল একটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত অবৈধ পাথর ও বালু উত্তোলন ঠেকাতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে ব্যবহৃত ১০০টি বারকি নৌকা ভেঙে ফেলা হয় এবং ১৩০ ফুট বালু জব্দ করা হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে সরকারি নির্দেশনায় বন্ধ থাকা সিলেটের সব পাথর কোয়ারিতে গণলুট শুরু হয়। কয়েক হাজার পাথরশ্রমিক প্রকাশ্যে পাথর উত্তোলন করেন। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের পৃষ্ঠপোষকতায় এ লুটপাট চলে। তুলনামূলকভাবে পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরে লুটপাট কম হলেও গত ২৩ এপ্রিল থেকে আবার লুট শুরু হয় এবং এক সপ্তাহে প্রায় ৮০ শতাংশ পাথর তুলে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে ধলাই নদীর উৎসমুখে সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র অবস্থিত। প্রায় ১৫ একর এলাকায় বিস্তৃত এ কেন্দ্রটি ছোট-বড় অসংখ্য পাথরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত জলের স্রোতোধারার জন্য পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। কিন্তু পাথর লুট হওয়ায় এখন পর্যটকেরা হতাশায় পড়েছেন।

Watermark