১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। ভোর ৫:৩০ থেকে ৭:০০ পর্যন্ত ঢাকা শহরের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে ঘটে শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সপরিবারে হত্যাকাণ্ড। একদল সামরিক অফিসার ও ১৭০ থেকে ৭০০ জন সৈনিক অংশ নেয় এই হত্যাযজ্ঞে। হামলার নেতৃত্ব দেন কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, কর্নেল খন্দকার আবদুর রশিদ, মেজর একে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, লে. কর্নেল শরীফুল হক ডালিম, মেজর আজিজ পাশা, মেজর বজলুল হুদা, লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান প্রমুখ।
হামলাকারীরা ধানমন্ডি ৩২-এর বাসভবনে গুলি চালিয়ে নিহত করেন শেখ মুজিবুর রহমানকে। একই সময়ে নিহত হন তার স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, দুই পুত্র শেখ কামাল ও শেখ জামাল, দুই কন্যা সুলতানা কামাল খুকী ও পারভীন জামাল রোজী এবং ছোট ছেলে শেখ রাসেল। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্যান্য গৃহস্থদের মধ্যে আরও ৪০ থেকে ৫০ জন নিহত হন।
হামলার সময় ব্যবহার করা হয়েছিল ২৮টি গোলাবিহীন টি-৫৪ ট্যাঙ্ক, ১০৫ এমএম হাউইটজার কামান, মেশিনগান, রাইফেল এবং গ্রেনেড। ঘটনার পর শেরশাহ সুরী রোড ও শাহজাহান রোডের বিভিন্ন বাড়িতেও মর্টারের গোলার আঘাতে অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যেখানে আরও অনেকে নিহত হন।
এই হত্যাকাণ্ডের ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ গভীর অস্থিরতার মধ্যে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রতিবছর ১৫ আগস্টে তার পরিবারের শহীদদের স্মরণে মিলাদ মাহফিল, দোয়া, শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং বিভিন্ন আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।