কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাকে এক করে দেখার সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশকেও শেখ হাসিনার সঙ্গে এক করে দেখার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, “যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন জয় বাংলা থাকবে, বঙ্গবন্ধু থাকবে। বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশের পিতা থাকবেন।”
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ‘মাকড়াই দিবস’ উপলক্ষে কাদেরিয়া বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর মাথায় প্রস্রাব করা হয়নি, আমার মাথায় প্রস্রাব করা হয়নি, জিয়াউর রহমানের মাথায় প্রস্রাব করা হয়নি-প্রস্রাব করা হয়েছে বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার মাথায়। এর বিচার চাই, বিচার চাই, বিচার চাই।” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যারা ভেঙেছেন, তাদেরও বাড়িঘর ও কবর আছে। সীমা অতিক্রম না করতে তিনি সতর্ক করেন।
জাতির পিতা প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “বঙ্গবন্ধু যদি জাতির পিতা না হন, তবে আপনার পিতা কে? কোনো সন্তানের পিতা না থাকলে সে সন্তান সম্মানী হয় না, কুলাঙ্গার হয়।”
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার পতন জনগণের আন্দোলনের কারণে হয়েছে, এটি আল্লাহর তরফ থেকে এসেছে। তবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অন্যায় হলে তিনি তার প্রতিরোধ করবেন। কাদের সিদ্দিকীর ভাষায়, “আইন অনুযায়ী বিচার করুন, শাস্তি দিন। কিন্তু আমি বেঁচে থাকতে তার বিরুদ্ধে অন্যায় হলে রুখে দাঁড়াব।”
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গেও কাদের সিদ্দিকী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আপনাকে আমি একসময় সম্মান করতাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, এক বছরের শাসনে আপনাকে আর হৃদয় থেকে নিতে পারছি না। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না দিলে শেখ হাসিনার চেয়েও ভয়াবহ পরিণতি হবে আপনার।”
মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মানকারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় যারা জুতার মালা দিয়েছে, আমি ইনশাআল্লাহ তাদের প্রত্যেকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেব।”
সভায় সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুর হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমদাদুল হক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন, হুমায়ুন বাঙ্গাল, ঘাটাইল উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমুখ। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।