ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। পুত্রবধূর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধা শাশুড়ি আম্বিয়া খাতুন। শুধু মারধরই নয়, তাকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গত ২৬ জুলাই সকালে উপজেলার পৌরসদরের ভিটি ঝগড়ারচর (টেকপাড়া) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
আম্বিয়া খাতুন মৃত রহিম মিয়ার স্ত্রী। তার পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। অভিযুক্ত পুত্রবধূ কলি আক্তারের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে বিভিন্ন সমিতি ও লোকজনের কাছ থেকে ঋণ করে আম্বিয়া তার এক ছেলেকে বিদেশে পাঠান। তখন শর্ত ছিল, ছেলে প্রবাসে গিয়ে ঋণ শোধ করবে। বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা আসত কলির নামে। কিন্তু কলি ঋণ শোধে কোনো উদ্যোগ নেননি। বরং শাশুড়ি টাকা চাইলে বিভিন্ন সময় তাকে মারধর, গালিগালাজ এবং চোখে মরিচগুঁড়া ছিটিয়ে নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে একাধিকবার প্রতিবেশীদের কাছে বিচার চাইলেও কোনো সমাধান মেলেনি।
ঘটনার দিন সকালে কিস্তির টাকা চাইতে গেলে কলি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি আম্বিয়াকে ঘর থেকে টেনে বের করে বেধড়ক মারধর করতে করতে বাড়ির পাশের কবরস্থানের কাছে একটি ঝোপে নিয়ে যান। সেখানে মাটিতে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করেন। ঠিক সে সময় আম্বিয়ার আরেক ছেলের স্ত্রী মরিয়ম ঘটনাটি দেখে ফেলেন এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিও করতে দেখে কলি হুমকি-গালিগালাজ করতে করতে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান। পরে আহত আম্বিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগীর বড় ছেলে গিয়াসউদ্দিন এবং পুত্রবধূ মরিয়ম বেগম অভিযোগ করে বলেন, কলি ও তার মা মমতাজ বেগম মিলে দীর্ঘদিন ধরে আম্বিয়াকে নির্যাতন করছেন। টাকার জন্যই তাকে কবরস্থানের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে মরিয়ম দেখে ফেলায় প্রাণে বেঁচে যান আম্বিয়া।
এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে সাংবাদিকরা অভিযুক্ত কলির বাড়ি গেলে তিনি ও তার মা পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান জামিল খান বলেন, ‘‘আমরা ভুক্তভোগীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’