সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাঠি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম শামীম (৩৬) খুনের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান খুলনার পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন।
পুলিশ সুপার জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় বৃষ্টি স্বীকার করেন যে, স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। শামীম প্রায়ই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার তিন দিন আগে মামাতো ভাই ওবায়দুল্লাহকে বাড়িতে ডেকে আনেন। পরদিন ওবায়দুল্লাহকে তিনি জানান, স্বামীর নির্যাতনে তিনি শামীমকে খুন করতে চান। এতে ওবায়দুল্লাহ রাজি হন।
ঘটনার দিন গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতের খাবারের পর শামীম ও তার স্ত্রী বৃষ্টি তৃতীয় তলার একটি ফাঁকা ফ্ল্যাটে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে যান ওবায়দুল্লাহ। পরে ছাদে রাখা একটি ছোরা নিয়ে তিনি আবার তৃতীয় তলায় নামেন। এ সময় বৃষ্টি ইশারায় ওবায়দুল্লাহকে জানিয়ে দেন কীভাবে কোপ দিতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওবায়দুল্লাহ ছুরি দিয়ে শামীমের ঘাড়ে কোপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই শামীম মারা যান।
এরপর বৃষ্টি ও ওবায়দুল্লাহ ছাদে গিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি পাশের জলাশয়ে ফেলে দেন। পরে স্বাভাবিক আচরণ করে শামীমের মায়ের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যে পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, হত্যাকাণ্ডটি প্রথমে ক্লুলেস মনে হলেও চৌকস টিমের তদন্তে সত্য উদ্ঘাটিত হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা রশিদা খাতুন ডুমুরিয়া থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে বৃষ্টি হত্যার কথা স্বীকার করেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে বয়স কম হওয়ায় তার মামাতো ভাই ওবায়দুল্লাহকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ডুমুরিয়ার আঠারোমাইল এলাকার নিজ বাড়ির তৃতীয় তলায় যুবদল নেতা শামীম শেখকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়।