বরিশালের মুলাদীতে টাকার বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই ভাই মিলে আরেক ভাইয়ের চোখ উপড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর নাম সিরাজুল ইসলাম ওরফে রিপন ব্যাপারী (৩৬)। তিনি স্থানীয় আশেদ ব্যাপারীর সেজ ছেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রিপন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের অন্তত ৮টি মামলা এবং মুলাদী থানায় হত্যা মামলাসহ প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, চুরি-ছিনতাই করে জমানো প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণালংকার মেজ ভাই রোকন ব্যাপারীর কাছে গচ্ছিত রেখেছিলেন রিপন। দীর্ঘদিন ধরে সেই টাকা-স্বর্ণ ফেরত চাইছিলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে তিন ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ চলছিল এবং একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা থেকে বাড়ি এসে রিপন আবারও রোকনের কাছে টাকা চান। রোকন অস্বীকৃতি জানালে তাঁদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। পরে রাত ১১টার দিকে বাড়িতে ফেরার পর পুনরায় কথাকাটাকাটি শুরু হলে বাবা আশেদ ব্যাপারী ক্ষিপ্ত হয়ে রিপনকে মারধর করে চোখ তুলে ফেলার কথা বলেন। বাবার এমন কথার পর রোকন ও স্বপন ব্যাপারী মিলে রিপনের দুই চোখ উপড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ।
ভুক্তভোগীর ছেলে আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, “আমার বাবার গচ্ছিত টাকা ও স্বর্ণ আত্মসাৎ করতে চাচ্ছেন আমার চাচারা। তাই পরিকল্পিতভাবে তাঁরা বাবার চোখ তুলে ফেলেছেন। আমরা এ ঘটনায় মামলা করব।”
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. টিপু সুলতান জানান, “গতরাত ১২টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় রিপন ব্যাপারীকে আনা হয়। তাঁর দুই চোখই উৎপাটিত ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
মুলাদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুদ বলেন, “পারিবারিক বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্তরা বর্তমানে পলাতক। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।”